
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, শরীয়তপুর: মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করে লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকরা। কারণ, বাজারে এই পেঁয়াজের যে দাম পাওয়া যাচ্ছে তাতে লাভ দূরে থাক, উৎপাদন খরচও ওঠছে না।
কৃষকরা জানান, আবাদের জন্য ৯ হাজার টাকা মণ দরে বীজ (অঙ্কুরিত পেঁয়াজ) কিনতে হয়েছে। প্রতি বিঘায় সাত মণ করে বীজ লেগেছে। তাতে বীজ বাবদই প্রতি বিঘায় ৬৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ ছাড়া বিঘায় অন্যান্য খরচ লেগেছে আরও প্রায় ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজে চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা। তারা জানান, বিঘা প্রতি যে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে তাতে প্রতি মণে খরচ ২ হাজার টাকার বেশি। আর বাজার দর ৮৪০ টাকা। অবশ্য যারা আগাম আবাদ করেছিলেন তারা কিছুটা সন্তোষজনক দাম পেয়ে লাভবান হয়েছেন। আগাম আবাদ করেছেন ১৫ থেতে ২০ শতাংশ কৃষক। সেই হিসেবে ৮০ ভাগ কৃষক মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করে লোকসানে পড়েছেন। বিঘা প্রতি তাদের লোকসান ৩০ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা।
বাজার সূত্রে জানা যায়, প্রথম পর্যায়ে মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম ছিল মনপ্রতি ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা। ধীরে ধীরে দাম কমতে কমতে একই পেঁয়াজের দাম এসে দাঁড়িয়েছে মনপ্রতি ৭২০ টাকা থেকে ৮৮০ টাকা। বাজারে এখন হালি পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। হালি পেঁয়াজের দাম পাচ্ছেন কৃষক মনপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২৮০ টাকা। তাও উৎপাদন খরচের তুলনায় অর্ধেক।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী জেলায় এবার পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ১২০ হেক্টর থাকলেও আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে মুড়িকাটা ৩ হাজার ৮৬০ হেক্টর ও হালি পেঁয়াজ ৪২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উত্তোলন সম্পন্ন হলেও প্রায় ১০০ হেক্টর জমির হালি পেঁয়াজ উত্তোলন এখনো বাকি রয়েছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজের ফলন হয়েছে হেক্টরপ্রতি ১০ থেকে ১৩.৫ টন ও হালি পেঁয়াজ ৮ থেকে ১০ টন।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোস্তফা কামাল হোসেন বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে না পারায় উত্তোলনের সাথে সাথেই বিক্রি করতে হয়। বাজার ব্যবস্থায় ত্রুটির কারণে তারা প্রকৃত মূল্যটা পান না। তাই আমরা কৃষকদের সংরক্ষণযোগ্য হালি পেঁয়াজ আবাদে উদ্বুদ্ধ করছি।