বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা :২০০১ সালে পয়লা বৈশাখে রমনা বটমূলে বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুল ইসলাম গ্রেপ্তার হয়েছে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেপ্তার করেছে। র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুল ইসলামকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মুফতি শফিকুল ইসলাম ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলারও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১৪ই এপ্রিল রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানস্থলে দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয়। পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় সেগুলোর। ওইদিন বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলাকালে সকাল ৮টা ৫ মিনিটে একটি ও ১০টা ১৫ মিনিটের পর অন্য বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) ওই বোমা হামলায় প্রাণ হারান ১০ জন। আহত হন আরও অনেকেই।
এ ঘটনায় হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে ওইদিনই রমনা থানার পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করে।
হত্যা মামলার রায় হয় ২০১৪ সালের ২৩শে জুন। রায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
১৯৯২ সালে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ নামে একটি মৌলবাদী সংগঠনের সৃষ্টি হলে মুফতি শফিকুল ইসলাম দেশের আলোচনায় আসেন। শফিকুল ভৈরব এলাকায় প্রাইমারি পাশ করার পর স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় শিক্ষা নেন। এরপর চলে যান পাকিস্তান। সেখানে কিছুদিন লেখাপড়া করার পর আফগানিস্তান গিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে এসে ১৯৯২ সালে হরকাতুল জিহাদ সংগঠন গড়ে তোলেন।
এক সময় শায়খ আবদুর রহমান ও মুফতি হান্নানের সঙ্গে জড়িত হয়ে দেশে জঙ্গিবাদ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন মুফতি শফিকুল ইসলাম। পরে ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার তদন্তের পর সে মামলার আসামি হন।
ভৈরবের বাঁশগাড়ী গ্রামের মৌলভি শিশু মিয়ার ৬ ছেলের মধ্য প্রথম ছেলে মুফতি শফিকুর রহমান। তারা ৪ বোন। তার ভাইদের মধ্য ৩ ভাই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে এখন চাকরি করছেন। মুফতি শফিকুরের এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে ভৈরব এলাকায়।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, মুফতি শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় ৫টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তার মধ্য একটি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও একটি যাবজ্জীবন সাজার।