‘গণপরিবহন না পেয়ে মেট্রো প্রভাতীতে যাতায়াত করে’-বেলায়েত
নাজমুল হোসেন
চট্টগ্রাম: নগরীর গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা দূর, যানজট নিরসন, যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি বিশেষ স্পেশাল কাউন্টার সার্ভিস মেট্রো প্রভাতী চালু করে মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপ। কিন্তু চালুর ৫ বছরেও কাঙ্ক্ষিত সার্ভিস দিতে পারেনি এই মালিক সমিতির স্পেশাল বাস সার্ভিসটি।
সপ্তাহে ছয়দিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ১০ নম্বর রুটে (পতেঙ্গা সি-বিচ থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত) স্পেশাল কাউন্টার সার্ভিসের বাসগুলো চলাচল করে। শুক্রবার এই সার্ভিস বন্ধ থাকে উদ্বোধনের বছরের আরো চারটি রুটে এই সার্ভিস চালু করার কথা থাকলেও এখনও করতে পারেনি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন নগরীর অসহনীয় যানজট নিরসনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সার্ভিস চালুর আহ্বান জানালেও এতো দিনেও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস চালু করতে পারেনি মালিক সমিতি। এছাড়া বহদ্দারহাট থেকে আগ্রাবাদ পর্যন্ত ফ্লাইওভার সার্ভিস’ চালু করলেও বর্তমানে তাও বন্ধ।
সরজমিনে দেখা যায়, মেট্রো প্রভাতীর প্রায় প্রত্যেকটি বাসে ডাবলের বেশি যাত্রী পরিবহন করছে। অফিস শুরু ও শেষে এর চিত্র আরো ভয়াবহ হয়। ইপিজেড থেকে আগ্রাবাদের সাধারণ ভাড়া ৮ টাকা। কিন্তু এই পরিবহনে ভাড়া ১৬ টাকা। আবার ইপিজেডের পরে হাসপাতাল গেইট কিংবা স্টিল মিল গেলে ভাড়ার অনুপাত বেড়ে যায় দিগুণেরও বেশি। তারপর আবার অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করে এই সার্ভিসটি। যাত্রীদের অভিযোগ, ডাবল ভাড়া ডাবল যাত্রী এই কেমন নিয়ম!
হাসপাতাল গেট থেকে মো. রফিক মেট্রো প্রভাতী করে প্রতিদিন আগ্রাবাদ যায় নিজ কর্মস্থলে। তিনি বলেন, শুরুর কয়েক বছর সার্ভিস কিছুটা ভালো থাকলেও কিছু দিন হলো ডাবল যাত্রী নিচ্ছে মেট্রো প্রভাতীতে। একটু আরামে যেতে ডাবল ভাড়া দিয়ে এই স্পেশাল বাসটিতে উঠি কিন্তু প্রায় সময় বাসটি অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করে। তারা যদি অতিরিক্ত যাত্রী নিবে তাহলে ডাবলের বেশি ভাড়া নেওয়ার কি মানে?
করোনার সময় কাউন্টারে টিকেট বিক্রেতাদের বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু করোনার সময় সরকার ঘোষিত ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ালেও টিকিট বিক্রেতাদের বেতন কমানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক টিকিট বিক্রেতা বলেন, করোনার সময় থেকে আমাদের বেতন কমে গেছে। আগে ৯ হাজার টাকা পেলেও এখন ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা দেয়। মালিক পক্ষ বলেছেন কোম্পানি লসের কারণে বেতন কমিয়ে দিয়েছে।
তবে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণের বিষয়ে তিনি বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী আমরা উঠতে দেইনা। কিন্তু যাত্রীরা জোর করে উঠে, উঠতে না দিলে আমাদের গাল-মন্দ করে। আমারা কি করবো?
মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল জানান, সিটি কর্পোরেশনের নতুন মেয়র ঢাকা থেকে আসলে সামনের সপ্তাহে সিটি গেট থেকে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত নতুন বাস সার্ভিস উদ্বোধন করবে। আশা করি নগরীর আরো ২ টি রুটে অতিশীগ্রই নতুন বাস সার্ভিস চালু হবে।
ডাবল যাত্রী ডাবল ভাড়া বিষয়ে তিনি বলেন, যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে আমাদের এই সার্ভিস। অফিস টাইম ছাড়া তেমন যাত্রী পাওয়া যায় না। অফিস ছুটির সময় গণপরিবহন সংকট থাকার কারণে যাত্রীদের চাপ বেশি থাকে। তখন যাত্রীরা গণপরিবহন না পেয়ে আমাদের মেট্রো প্রভাতীতে যাতায়াত করে।
ডাবল ভাড়া দিয়ে ডাবল যাত্রী পরিবহন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে আমারা ভাড়া নিচ্ছি। করোনার সময় ক্ষতি আমরা এখনও পুষিয়ে উঠতে পারিনি। তার পরও আমরা চলতি মাস থেকে কাউন্টারে টিকেট বিক্রেতাদের বেতন আগের মতো করে দিয়েছি।