বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
করোনা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে, তার মধ্যেই মাঙ্কিপক্সের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এর মধ্যেই আরও ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। মাঙ্কিপক্সের চেয়েও এই সংক্রামক রোগ আরও বেশি ভয়ঙ্কর বলে জানিয়েছেন ভাইরোলজিস্টরা। এর নাম মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিস (Meningococcal Meningitis)। আমেরিকায় ইতিমধ্যেই এই রোগ ছড়িয়েছে, ফ্লোরিডায় আক্রান্ত ১২ জন, সংক্রমিত প্রায় পঞ্চাশ। এই সংখ্যাও বাড়ছে।
মেনিনগোকক্কাল মেনিজাইটিস (Meningococcal Meningitis) মারাত্মক সংক্রামক রোগ যা সরাসরি মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। ব্রেনে প্রদাহ হয়। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ১৫ শতাংশ মানুষ তাদের বাকি জীবদ্দশায় মস্তিষ্ক এবং স্নায়ু রোগ মতো জটিল সমস্যায় ভুগতে থাকে।
মেনিজাইটিস কী (Meningococcal Meningitis)? কীভাবে ছড়ায়?
মেনিনজাইটিসের কারণ হল নেইসেরিয়া মেনিনজাইটিডিস নামে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া, যাকে মেনিগোকোকাসও বলা হয়। এই রোগ এক ব্যক্তি থেকে অন্যের মধ্যে খুব সহজেই কফ বা হাঁচি-কাশির সাথে শ্বাসযন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসা কণার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আক্রান্তের লালার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ড্রপলেট সহজেই সুস্থ ব্যক্তির শরীরে ছড়াতে পারে। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্য়ে রোগের উপসর্গ দেখা দেয়, ট্রিটমেন্ট না হলে মৃত্যু ঘটতে পারে।
মেনিনগোকক্কাল (Meningococcal Meningitis) রোগের সংক্রমণ যে কোনও বয়সে হতে পারে। বিশেষ করে ৫ বছরের নীচে বাচ্চা, বয়স্করাই হাই-রিস্ক গ্রুপে রয়েছে। তবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে কমবয়সীদের মধ্যেও এই রোগ মহামারী হয়ে উঠতে পারে।
ব্যাকটেরিয়া মূলত রোগীর নাকে ও গলায় বাসা বাঁধে, এবং সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে না চললে সহজেই আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে অন্য কারও মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কী কী লক্ষণ দেখা দেয়?
জ্বর বা কাঁপুনি, খিঁচুনি, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
পেশীতে অসহ্য যন্ত্রণা
মাথা ব্যথা, স্টিফ হয়ে যেতে পারে ঘাড়
বমিবমি ভাব, ক্লান্তি, ঝিমুনি
চোখে আলো পড়লে অস্বস্তি হবে
মানসিক স্থিতি বদলে যেতে পারে
এই লক্ষণগুলো দেখা দিলেই রক্ত এবং সেরিব্রাল ফ্লুইড পরীক্ষা করতে হবে। দেখতে হবে ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন রয়েছে কিনা।
এই রোগ প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হল ভ্যাকসিন। এমসিভি – মেনিংগোকোকাল কনজুগেট ভ্যাকসিন বাচ্চাদের দিয়ে রাখলে ভাল। এই ভ্যাকসিনটিই অনুর্ধ্ব ৯ মাসের বাচ্চাদেরও দেওয়া যায়। প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ার কারণে এই সময়েই বাচ্চাদের সবথেকে বেশি ভ্যাকসিনেশনের দরকার হয়।