বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: মার্চে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগে আজ বৃহস্পতিবার বিশাল শোডাউন করলেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। লালদিঘি মাঠে আহূত মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতি বিরোধী মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে হয়েছে শোডাউন। দুপুরের পর থেকে লালদিঘিগামী জনস্রোতে নগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
সমাবেশে উপস্থিত লাখো নারী-পুরুষকে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতি প্রতিরোধে শপথ বাক্য পাঠন করান তিনি।
মহাসমাবেশটি করেছে সিটি করপোরেশন (চসিক)। সমাবেশে মেয়র বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জনগণের প্রতি যে দায়বদ্ধতা, অঙ্গীকার, যে সেবা আমরা দিয়ে থাকি সেই অঙ্গীকার থেকে ৪১টি ওয়ার্ডের সব শ্রেণি পেশার মানুষকে নিয়ে মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, যৌতুক ও দুর্নীতিবিরোধী জনমত তৈরি করতে সভা-সমাবেশ করেছি। আজ চট্টগ্রামের এই ঐতিহাসিক লালদিঘি মাঠে মহাসমাবেশের আয়োজন করেছি। আমাদের মূল লক্ষ্য নগরবাসীকে শপথ করানো। আমরা শপথ করবো-মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি ও যৌতুক থেকে আমাদের পরিবারকে রক্ষা করার, নগরীকে সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদ ও যৌতুকমুক্ত করার।
নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল সহকারে নারী-পুরুষ মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুপুর থেকে লালদিঘি মাঠে এসে জড়ো হয়। এসময় মাঠে জায়গা সংকুলান না হয়ে অনেকে আশপাশের রাস্তায় অবস্থান নেন। সমাবেশের এক পর্যায়ে মাঠের পেছনে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
নারকোটিক্স ডিজি জামাল উদ্দিন:
সমাবেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাদক সহ্য করলে, মাদক আমাদের ধ্বংস করে দেবে। মিয়ানমার এক বছরে ৬ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করেছে। বাংলাদেশ থেকে হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে। এখন সময় এসেছে মাদক রুখে দাঁড়ানোর। মাদকের বিরুদ্ধে গর্জন শুনতে চাই। চট্টগ্রামের মেয়রের নেতৃত্বে এ জনপদকে মাদকশূন্য করতে পারবো। যারা মাদকসেবী তারা জানোয়ারে পরিণত হয়। তাই মাদক থেকে দূরে থাকুন।
সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর এইচএম সোহেলের সভাপতিত্বে ও প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) আমেনা বেগম, প্যানেল মেয়র নিছারউদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, প্যানেল মেয়র জোবায়দা নার্গিস খান, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামশুদ্দোহা প্রমুখ।
শপথ:
সিটি মেয়র শপথ করান যে – ‘আমি মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শপথ করছি যে- নিজেকে সফল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতা ধরে রাখতে কোনো অনৈতিক কাজে অংশগ্রহণ করবো না। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিতে জড়িত হবো না। কোনো অজুহাতে মাদকের শরণাপন্ন হবো না। কোনো অবস্থাতেই যৌতুক গ্রহণ ও প্রদান করবো না। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, যৌতুক, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলবো। সব অপরাধবিষয়ক সংবাদ প্রথমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী দেশকে ভালোবাসবো। বাংলাদেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত রাখতে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবো। আমরা জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর এ মাহেন্দ্রক্ষণে তার যোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত দুর্নীতি ও মাদকবিরোধী চলমান জিরো টলারেন্স নীতিকে বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। আমাদের প্রত্যাশিত ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সন্ত্রাস, মাদক, যৌতুক ও দুর্নীতির প্রধান অন্তরায়। এ অন্তরায়গুলো দূর করে নিরাপদ বাসযোগ্য পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ও উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা ঐক্যবদ্ধ হলাম। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’
