বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদসহ সাত কর্মকর্তার উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপে পুলিশ সদস্যরা মর্মাহত ও বিবৃত। এবং এই নিষেধাজ্ঞাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত। এসোসিয়েশনের সভাপতি অতিরিক্ত আইজিপি (স্পেশাল বাঞ্চ) মো. মনিরুল ইসলাম ও এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব বলা হয়েছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, যেকোন দেশের উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো- অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। পুলিশ বাংলাদেশের প্রধান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও আইজিপি বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশ দেশের গণমানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সন্ত্রাসবাদ দমন, মানবাধিকার সুরক্ষা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সব সময় বাংলাদেশের সৌহাদ্যপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের সরকারি পর্যায় ছাড়াও প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি পর্যায়েও এই সুসম্পর্ক বিদ্যমান।
নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের কর্মতৎপরতার কারণে বাংলাদেশে চমৎকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশ বিনিয়োগ ও ব্যবসার জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন, সাইবার অপরাধসহ নানা ধরনের অপরাধ দমনে পুলিশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া নিজেদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার পুলিশের সদস্যদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ নানাভাবে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ এক দ্বিপাক্ষীয় সম্পর্ক বজায় থাকা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থ দপ্তর ও পররাষ্ট্র দপ্তর কর্তৃক পুলিশের অভিভাবক বেনজীর আহমেদসহ সাতজন কর্মকর্তার উপর যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই ছাড়াই নিষেধাজ্ঞা আরোপ অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এমন আকস্মিক একতরফা সিদ্ধান্তে পুলিশের প্রতিটি সদস্য মর্মাহত ও বিব্রত।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন দৃঢভাবে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ বিরোধী একটি চক্র যারা বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে বিব্রত করতে চায়, দুই দেশের পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারাই আন্তর্জাতিক লবিস্ট গ্রুপের সহায়তায় ভুল, মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করে বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থাকে গোপন করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাবিত করেছে।
বাংলাদেশে আইনের শাসন, মানবাধিকার সুরক্ষা, আন্তর্জাতিক প্রটোকল ও কনভেনশন প্রতিপালন এবং স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা সংক্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রকৃত তথ্য ও অবস্থা মূল্যায়ন করে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা এবং বাংলাদেশ পুলিশের চলমান আন্তঃদেশীয় সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কার্যক্রমকে বেগবান করতে সহায়তা করবে বলে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশন প্রত্যাশা করে।