Home Third Lead নওগাঁর পল্লীতে বিদেশী ফল রকমেলন

নওগাঁর পল্লীতে বিদেশী ফল রকমেলন

সাপাহার (নওগাঁ) থেকে হারুনুর রশিদ: বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত নওগাঁর সাপাহারে বিদেশী ফল রকমেলন চাষ করে স্বাবলম্বী হবার দ্বারপ্রান্তে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা ফারুক হোসেন।

বুধবার (২০এপ্রিল) দুপুুরে উপজেলার তুলশীপাড়া মাঠে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাচায় দুলছে বিদেশী জাতের ফল রকমেলন। সবুজ ও কিছুটা খসখসে গোলাকৃতির ফল দুলছে মাচায়। তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা ফারুক হোসেন তার নিজস্ব তিন বিঘা জমিতে তিন জাতের রকমেলন চাষ করেছেন। জাতগুলো হলো জাম্বু, মাইলাভ ও মারলিন। এই জাতীয় ফসলের জীবনকাল ৭৫ দিন।রকমেলন প্রতি একরে ফলন হয় প্রায় আড়াই থেকে তিন মেট্রিক টন। এই জাতের ফলগুলো পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় এলাকা ও সারাদেশে চাহিদা অনেক বেশি।

কৃষি উদ্যোক্তা ফারুক হোসেন বলেন, আমি ২০০৭ সালে কাজের জন্য সৌদী আরব যাই। আমি যে মালিকের আওতায় কাজ করতাম তিনি রকমেলন চাষ করতেন। আমি কাজের ফাঁকে মাঝে মধ্যে রকমেলন দেখতে যেতাম। সেখান থেকে আমি রকমেলন চাষে উদ্বুদ্ধ হই। পরে আমি ২০১৮ সালে দেশে ফিরে আসি। ইউটিউব দেখে রকমেলন চাষ প্রক্রিয়া শিখে নেই। পরবর্তী সময়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে বীজ সংগ্রহ করে রকমেলন চাষ করি। আমি মালচিং পদ্ধতি ও সরাসরি মাটিতে এই দুই প্রক্রিয়ায় রকমেলন চাষ করেছি। বর্তমানে আমার চাষকৃত একেকটি রকমেলনের ওজন প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ কেজি ওজন হয়েছে। যা আমার কল্পনার বাইরে ছিলো। বর্তমানে রকমেলন ফল পেকে গেছে এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা আসছে কেনার জন্য। রকমেলনের কেমন দাম হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, খুচরা বাজারে প্রতিকেজি রকমেলন বিক্রয় হয় আড়াই থেকে তিনশ’ টাকা। তবে পাইকাররা এক থেকে দেড়শো’ টাকা পর্যন্ত দাম বলছে। হয়তোবা দু’একদিনের মধ্যেই বাগান থেকে ফল হারভেষ্টিং করতে পারবো। এছাড়াও কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষন নিয়েছি এবং কৃষি অফিস থেকে নানা ধরণের পরামর্শ ও সুযোগ সুবিধা পেয়েছি।

তিন বিঘা জমিতে খরচ ও লাভের প্রশ্নে তিনি বলেন, ফল পাকানো পর্যন্ত আমার খরচ হয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে আমার এই তিন বিঘা জমি থেকে প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার ফল বিক্রয়ের আশা করছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ শাপলা খাতুন বলেন, রকমেলন চাষের জন্য কৃষক ফারুককে অফিস থেকে সার ও কীটনাশক প্রদান করা হয়েছে। এটি বিদেশী তরমুজ জাতীয় ফল। এই অঞ্চলে এই ফলের চাষাবাদ খুবই কম যার ফলে পরিচিতি পেতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে এটি লাভজনক একটি চাষ। কউে রকমেলন চাষ করতে চাইলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে সকল ধরণের সহায়তা অব্যহত থাকবে।