Home অন্যান্য রতন টাটার অসম্পূর্ণ প্রেমজীবন

রতন টাটার অসম্পূর্ণ প্রেমজীবন

রতন টাটা

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধ পাল্টে দিয়েছিল রতন টাটার ব্যক্তিজীবনকে।
ব্যক্তিগত এক আলাপচারিতায় রতন টাটা একসময় জানিয়েছিলেন, কী ভাবে ওই যুদ্ধ তাঁর প্রেমজীবনের উপরে প্রভাব ফেলেছিল। কী ভাবে তা বিচ্ছেদের কারণ হয়েছিল তাঁর এবং তাঁর ভালবাসার মানুষের মধ্যে। আলাপচারিতায় রতন টাটা জানিয়েছিলেন, কলেজে পড়া শেষ করার পরে তিনি লস অ্যাঞ্জেলসের একটি আর্কিটেকচার ফার্মে কাজ পেয়েছিলেন। দুই বছরের মতো তিনি সেই ফার্মেই কাজ করেন। রতন টাটার নিজের ভাষ্যে, ‘‘মনোরম আবহাওয়া ছিল। আমার নিজের গাড়ি ছিল তখন। সব মিলিয়ে আমি আমার কাজ উপভোগ করছিলাম।’’ সেই সময়েই প্রেম ‘মহা সমারোহে’ প্রবেশ করে রতন টাটার জীবনে। সম্পর্কের গভীরতা এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে রতন টাটা বিয়ে করা সংসারী হওয়ার কথাও ভাবেন।

যে সময় রতন টাটা এবং মার্কিনী সুন্দরীর বিয়ের কথাবার্তা এগোচ্ছিলো, ঠিক সেই সময়েই রতন টাটার ঠাকুমা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর যে ঠাকুমা রতন টাটাকে এবং তার ভাইদেরকে সন্তান স্নেহ দিয়ে মানুষ করে তুলেছিলেন, সেই ঠাকুরমার অসুস্থতার খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসেন রতন টাটা।

Ratan Tata Grandmother

তবে দেশে ফিরে এলেও যে প্রেমিকার সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল, এমনটা কিন্তু নয়। রতন টাটার প্রেমিকা নিজের দেশ ছেড়ে ভারতে আসবেন এবং বিয়ে করে ভারতেই সংসার পাতবেন তারা, এই ঠিক ছিলো। মার্কিন সুন্দরীর পরিবারের তরফেও কোনও আপত্তি ছিল না। তবে ওই একই মুহূর্তে ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়!

যুদ্ধের এই ভয়াবহ পরিবেশে রতন টাটার প্রেমিকার পরিবার মেয়েকে ভারতবর্ষে পাঠাতে চাননি। যে কারণে তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। রতন টাটাও জীবনে আর কোনও মহিলার প্রতি আকৃষ্ট হননি। প্রেমিকার সঙ্গে বিচ্ছেদের ব্যথা নিয়ে আজও একাকীই রয়ে গিয়েছেন তিনি। বিদেশের মাটিতে যে প্রেম পর্বের সূচনা হয়েছিল, দেশের মাটিতে তা এভাবেই বিরহে রূপান্তরিত হয়।

 

সেই সময়ের ঘটনাপ্রবাহ স্মরণ করে টাটা বলছেন, ‘‘আমি যাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিল‌াম, আমি ভেবেছিলাম সে-ও আমার সঙ্গে দেশে আসবে। কিন্তু ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধ শুরু হওয়ায় তার বাবা-মা চাননি সে এই দেশে আসুক। ফলে তখনই আমরা দু’জন আলাদা হয়ে যাই।’’

অতএব সেখানেই ইতি পড়ে রতন টাটার প্রেম জীবনের। তারপর জীবন এগিয়েছে তার নিজস্ব গতিতে। রতন টাটা টাটা সাম্রাজ্যের দায়িত্বপাট সামলেছেন। সেই সাম্রাজ্যের আরও প্রসারণ ঘটিয়েছেন। কুড়িয়ে নিয়েছেন আপামর ভারত তথা বিশ্বের শ্রদ্ধা। শুধু সম্পদের মাপকাঠিতে নয়, তাঁর বৃস্তিত সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। তবে সেই প্রাপ্তির জীবনে শুধু অপ্রাপ্তি হয়ে থেকে গেছে হয়তো ‘তুমি রবে নীরবে’র এক অসম্পূর্ণ প্রেমজীবন!