Home Second Lead ডিসেম্বরে রেকর্ডভাঙা রপ্তানি আয়

ডিসেম্বরে রেকর্ডভাঙা রপ্তানি আয়

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: ডিসেম্বরে প্রায় ৪৩ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। দেশের ইতিহাসে এটাই একমাসে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়।

২০২০ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২১ সালের ডিসেম্বেরে ৪৮.২৭ শতাংশ বেশি আয় হয়েছে রপ্তানি থেকে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)’র রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) ২ হাজার ৪৭০ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি করেছেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা, টাকার হিসাবে যা ২ লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি।

২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে আয় বেশি এসেছে ২৮.৪১ শতাংশ। এ ছয় মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১৩৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ হিসাবেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১৫.৫০ শতাংশ।

জুলাই-ডিসেম্বরে তৈরি পোশাক ছাড়াও কৃষি প্রক্রিয়াজাত, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য ও হস্তশিল্প রপ্তানি বেড়েছে। ফলে সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

তবে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয় কমেছে সাড়ে ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। মোট রপ্তানি আয়ের মধ্যে ১ হাজার ৯৯০ কোটি ডলারই এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৮.০২ শতাংশ বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১৫.১৯ শতাংশ।

৬৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারের কৃষি পণ্য, ৭১ কোটি ৬০ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল, ৫৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ৫৯ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। হিমায়িত মাছ রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ওষুধ রপ্তানি থেকে এসেছে ১০ কোটি ৫৫ লাখ ডলার।

মোট রপ্তানি আয়ের মধ্যে ৮০.৫৭ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। এর মধ্যে নিট পোশাক থেকে এসেছে ১ হাজার ১৬৬ কোটি ১৬ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ। লক্ষ্যের চেয়ে বেশি এসেছে ১৬.৩৫ শতাংশ। ওভেন পোশাক থেকে এসেছে ৮৭৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আয় বেড়েছে ২৪.৫০ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১৩.৭৫ শতাংশ।

গত বছরের ১লা জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি আয়ের মোট লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪৩.৫০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকে আয়ের লক্ষ্য ধরা আছে ৩৫.১৪ বিলিয়ন ডলার।

গত ২০২০-২১ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩৮.৭৬ বিলিয়ন ডলার আয় করে বাংলাদেশ, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ১৫.১০ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি (৩৩.৬৭ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম।

পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান রপ্তানি আয়ের এই উল্লম্ফনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, এত দ্রুত করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে আমরা ঘুরে দাঁড়াব, ভাবতে পারিনি। তবে, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন আমাদের নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। যদি ওমিক্রন সার বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে আবার থমকে যাবে আমাদের রপ্তানি ।

বিজিএমইএ পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, যদিও পোশাক খাতের রপ্তানির ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা গেলেও কিন্তু সামনে অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বিভিন্ন কাঁচামাল যেমন টেক্সটাইল, পণ্য জাহাজীকরণ খরচ, রং ও রাসায়নিক দ্রব্যের বাজার অনেক চড়া, কিন্তু পণ্য উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির অনুপাতে পোশাকের দাম সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বাড়ছে না। এছাড়া আমাদের পোশাক রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোতে কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ সুনামির মতো ছড়িয়ে পড়ছে। কোভিডের সংক্রমণরোধে ও নিজেদের রক্ষার্থে দেশগুলো বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এর ফলে পোশাকের নতুন ও চলমান রপ্তানি আদেশের উপর প্রভাব পড়ছে।