তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার পণ্য, চামড়া ও চামড়াপণ্য, কৃষি, প্লাস্টিক পণ্য রফতানি ইতিবাচক ধারার কারণেই সার্বিকভাবে পণ্য রফতানিতে প্রবৃদ্ধি
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: সদ্য সমাপ্ত মার্চ মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৭৬ কোটি ২২ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩০৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি ৫৪.৮২ শতাংশ।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা যায়, সামগ্রিকভাবে চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ৩ হাজার ৮৬০ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। দেশীয় মুদ্রায় পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ লাখ ৩২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকার বেশি। এ আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি এবং চলতি অর্থবছরের আলোচ্য সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি।
দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত তৈরি পোশাক ও বিশেষত নিটওয়্যার পণ্য রফতানি বেড়েছে। এছাড়া চামড়া ও চামড়াপণ্য, কৃষি, প্লাস্টিক পণ্য রফতানি ইতিবাচক ধারার কারণেই সার্বিকভাবে পণ্য রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) পোশাক রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৪২ কোটি ৮৪ লাখ ডলার যা গত বছরের একই সময়ের রফতানি পরিমাণের চেয়ে ৩৩ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে পণ্য রফতানি ছিল ২ হাজার ৩৪৮ কোটি ৭৯ লাখ ডলার।
পণ্যের ক্যাটাগরি অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে মার্চ মাস শেষে নিটওয়্যার পণ্য রফতানিতে ৩৫ দশমিক ২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। অন্যদিকে ওভেন পোশাকের রফতানি ৩২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বেড়েছে। ফলে সকল পণ্যের রফতানিতে ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তৈরি পোশাকের রফতানি আয় প্রসঙ্গে বিজিএমইএর’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, তৈরি পোশাক খাতে মার্চে সার্বিকভাবে ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কারণ গত বছর এ সময় কোভিডের কারণে রফতানি আয় অনেক কম ছিল। এ বছর মার্চ মাসে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়নের পোশাক রফতানি হয়েছে। অর্থাৎ রফতানির ইতিবাচক ধারা এখনো অব্যাহত আছে। এপ্রসঙ্গে বলেন, একদিকে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে করোনার কারণে লকডাউন হচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের পোশাকের প্রধান রফতানি বাজার ইউরোপ আমেরিকায় মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, এসব কারণেই পোশাকের অর্ডার বেড়েছে, রফতানি আয়ও বাড়ছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ফলে পণ্যের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে খরচ বেশি লাগছে। এছাড়া সুতার দামও বেড়েছে। এগুলো যদি স্বাভাবিক থাকত তাহলে রফতানি আয় আরও বেশি হতো তিনি উল্লেখ করেন।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কৃষিপণ্য রফতানিতে আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে। প্লাস্টিক পণ্য রফতানি আয় বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ। ৯ মাসে এ খাতে আয় হয়েছে ৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি আয়েও প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এসময় চামড়াজাত খাত থেকে রফতানি আয় এসেছে ৬৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ শতাংশ ও আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি।
এ সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি কমেছে। মার্চ শেষে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ৮৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে আয় ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ কম।
চলতি অর্থবছরে ৪ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সব শেষ তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রফতানি আয় ১৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি আছে। গত ২০২০-২১ অর্থবছর পণ্য রফতানি করে ৩ হাজার ৮৭৬ কোটি ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ।