গতকাল রবিবার ১৪ই জুন বাংলাদেশ কপিরাইট কর্তৃপক্ষ সেবা প্রকাশনীর পাঠকপ্রিয় দুই স্পাই-থ্রিলার সিরিজ, ‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র লেখক স্বত্ব বিষয়ে একটি রায় প্রদান করে। তদনুসারে, কাজী আনোয়ার হোসেন এই সিরিজ দুইটির প্রণেতা নন। রায়ে দু’টি সিরিজেরই মূল লেখক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় শেখ আবদুল হাকিমকে।
অনুবাদ কিংবা মৌলিক যাই হউক, তিন শতাধিক সাহিত্যকর্মের কপিরাইট একসঙ্গে এইভাবে বদলে যাওয়ার ঘটনা পৃথিবীতে নজীরবিহীন। দেখে শুনে মনে হলো, এটা যেন কোন এক জমিজমার মামলা। প্রকাশনার প্রায় অর্ধ শতাব্দী পর এই ধরণের দাবী ও তার সমর্থনে কপিরাইট রায় আমার কাছে পুরোপুরি হাস্যকর মনে না হলেও সম্পুর্ণ বোধগম্য নয়।
তবে, রায়টিতে বিবাদমান উভয় ব্যক্তির বইটি লেখা ও প্রকাশের ক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নেয়াসহ যোগসাজশের উল্লেখ রয়েছে। এই কথিত জোচ্চুরি প্রমানিত হয়ে থাকলে কপিরাইট অফিসের তো উভয় পক্ষের বিরুদ্ধেই একটি সুয়োমটো প্রতারণা মামলা ঠুকে দেওয়া সমীচিন। কারণ, শুধু কপিরাইট পরিবর্তন এবং টাকা পয়সার লেনদেনই এই বিষয়টির প্রকৃত সমাধান নয়। এর বাইরে, ভব্যতা, সভ্যতা, ন্যায় ও নীতি বিষয়ক সামাজিক এবং আইনী মাপকাঠিগুলিরও সঠিক উপলব্ধি ও প্রয়োগ দরকার।
অবস্থাদৃষ্টে আমি মনে করি, এতগুলো বছর কপিরাইট আইন এড়িয়ে লক্ষ লক্ষ পাঠককে ধোঁকা দেওয়ার এই অভিযোগটির একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের ফৌজদারি বিচারের আওতায় নিয়ে আসা উচিত।