নওগাঁ থেকে হাবিবুর রহমান (হাবিব): এবারের ঈদে করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে রাজধানীর পশুর হাটে দেখা মিলবে সীমান্তবর্তী নওগাঁর সাপাহার উপজেলার রানী, বিগ-শো, আন্ডারটেকার, বোরাক সহ পাঁচটি কোরবানীর পশুর।
২০ মন ওজনের বিগ-শো, আন্ডারটেকার ও বোরককে দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় করছেন সাপাহার বরেন্দ্র বহুমুখী এ্যাগ্রো ফার্মে সেলফিও তুলছেন অনেকে বিগ-শো ও বোরাকের সঙ্গে। অতীতে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সাধরণত এধরনের গরু লালন পালন হতে দেখেনি বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
সাপাহার উপজেলার বাসুল ডাঙ্গা এলাকায় বরেন্দ্র বহুমুখী ফার্মে কয়েক বছর ধরে বড় হয়েছে বিগ-সো, আন্টার টাইগার, বোরাক ও রাণী। ইতোমধ্যেপ্রতিটির দাম চাওয়া হয়েছে ১৫ লাখ টাকা করে। রাণী ও দেশী প্রাজাতীর রাজার দাম চাওয়া হয়েছে ৫লাখ টাকা করে। তবে বাজারের পরিস্থিতি ও আবহাওযার ওপর নির্ভর করে এদের দাম কিছুটা কম বা বেশীও হতে পারে এবং ভাল দাম পেলেই বিগ-সোদের বিক্রি করে দেবেন খামারি তছলিম উদ্দীনা।
তছলিম উদ্দীন পেশায় একজন সাংবাদিক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি কয়েক বছর পূর্বে সাপাহার উপজেলা সদরের অদূরে বাসুলডাঙ্গা গ্রামের পাশে ফাঁকা মাঠে সাপাহার বরেন্দ্র বহুমুখী এ্যাগ্রো ফার্ম তৈরী করে সেখানে ডেইরী, হৃষ্টপুষ্ট করণ, মাছ, হাঁস, ছাগল, ভেড়া পালন শুরু করেন। সাথে বিশাল আমের বাগানও তৈরি করেন। এবারের ঈদকে সামনে রেখে তিনি তার খামারের চারটি ষাঁড় ও একটি বকনা গরু (বাচ্চি) বিক্রির উপযোগি করে তুলেছেন। খামারের ষাঁড়গুলি প্রায় সমানে সমান তবে দেশী রাজা ও সিন্দি রানী সাহিওয়াল রাণী একটু আকারে ছোট। অ্যামেরিকান জার্সি ষাঁড় তিনটির ওজন কুড়ি মণ করে, দেশী ষাঁড় ও সিন্দি রাণীর ওজন সাড়ে আট মণ করে। ষাঁড়গুলির গায়ের রং কালো ও পাকরা দেশী এবং রাণীর গায়ের রং লাল বর্তমানে ডেইরী ও হৃষ্টপুষ্ট করণ মিলে তার খামারের গরুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৫০টি। সম্পূর্ণনেচারেল প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি, ভুট্টা ভাঙ্গা, অ্যাংকার ডাল চালের ক্ষুদ, সরিষার খৈলসহ নানা খাবার খাওয়ানো হয় তাদের। সর্বক্ষনিক গরু-ছাগলের পরিচর্যা করার জন্য পাঁচজন শ্রমিক রাখা হয়েছে ওই খামারে।
খামারি তছলিম উদ্দীন জানান, তিনি পেশায় একজন সাংবাদিক তার পেশার পাশাপাশি তিনি এই খামারে অতি যত্নের সাথে গরুগুলিকে লালন পালন করে এবারে ঈদের জন্য প্রস্তুত করেছেন। তিনি আশা করছেন ভালো দামেই গরুগুলি বিক্রি করতে পারবেন। যদি দাম ভালো পায় তাহলে আগ্রহের সাথে প্রতি বছর এরকম নতুন নতুন বড় গরু উপহার দিতে পারবেন সকলকে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: আশীষ কুমার দেবনাথ বললেন, সাংবাদিক তছলিম উদ্দীন আমাদের প্রাণীসম্পদ বিভাগের একজন পরিচিত খামারি। উপজেলা এমনকি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং সৌখিন গরু রয়েছে তার খামারে। কোরবানীর জন্য প্রস্তত করা গরুগুলি উন্নত ধরনের। আশা করি তিনি এবারের ঈদে গরুগুলির ভালো দাম পাবেন।