বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: দুবাই থেকে শরীরে সোনা লুকিয়ে পাচার করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হলেন কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাও। প্রায় ১৫ কেজি সোনাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। শরীরের বিভিন্ন অংশে এবং পোশাকের মধ্যে লুকিয়ে এই বিপুল পরিমাণ সোনা তিনি নিয়ে এসেছেন। ভারতীয় মুদ্রায় আনুমানিক মূল্য ১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
এই পাচারের খবর আগে থেকেই ছিল গোয়েন্দাদের কাছে। এর ওপর ভিত্তি করেই সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় অভিনেত্রীকে। ১৫ দিনের মধ্যে অভিনেত্রীর চারবার দুবাই ভ্রমণ করায় তিনি গোয়েন্দাদের সন্দেহের তালিকায় আসেন। অভিনেত্রীর স্বামীও তাঁর সঙ্গে দুবাইয়ে যেতেন। তবে, দুবাইয়ে অভিনেত্রী পরিবারের কোনও সদস্য নেই, সেখানে তাঁর ব্যবসাও নেই। তাহলে কেন বারবার তিনি দুবাই যাচ্ছেন তাও আবার এত কম সময়ে? এখানেই শুরু হয় সন্দেহ।
ভারতে অবতরণের পর তিনি নিজেকে কর্নাটকের পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মেয়ে বলে দাবি জানিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, দুবাই থেকে ভারতে আসার সময় বিমানবন্দরে কাস্টমস চেক এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি, যার ফলে দৃঢ় হয় সন্দেহ।
তল্লাশির সময় তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ এবং পোশাক থেকে সোনার বার উদ্ধার করা হয়। জ্যাকেটের মধ্যে বিপুল পরিমাণ সোনা লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি। এরপর রাতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে পেশ করার পর রানিয়াকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
আইপিএস আধিকারিক রামচন্দ্র রাও রানিয়ার বাবা। তিনি বর্তমানে কর্ণাটক রাজ্য পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের ডিজিপি হিসেবে কর্মরত। পুলিশের অনুমান, এই সুযোগ নিয়েই স্থানীয় পুলিশকর্মীদের সাহয্যে চেকিং এড়িয়ে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যেতেন রানিয়া।
অভিনেত্রীর এই কার্যকলাপ সম্পর্কে তাঁর বাবা অবগত কিনা তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। অভিনেত্রী একাই এই কাজ করছিলেন নাকি দুবাই ও ভারতের মধ্যে পরিচালিত বৃহত্তর সোনা চোরাচালান সিন্ডিকেটের অংশ ছিলেন, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিশ রানিয়ার বাসভবনে তল্লাশি চালিয়েও বিপুল পরিমাণ সোনা উদ্ধার করেছে ।
এই প্রথমবার নয়, এর আগেও নাকি দুবাই থেকে ভারতে তিনি বিনা বাধায় সোনা পাচার করেছিলেন। তবে রানিয়া একা, নাকি আরও কেউ এই পাচারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তা খতিয়ে দেখবেন গোয়েন্দারা। সোনা কেনার উৎস কী, সেটাও তদন্ত করে দেখা হবে। যদিও পরে অভিনেত্রী দাবি করেন, তাঁকে ব্ল্যাকমেল করে সোনা পাচার করতে বাধ্য করা হয়েছে।
রানিয়া কর্নাটকের চিকমাগালুরের বাসিন্দা। চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করার আগে তিনি বেঙ্গালুরুর দয়ানন্দ সাগর কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছিলেন। ২০১৪ সালে সুদীপ পরিচালিত কন্নড় সিনেমা ‘মানিক্য’ – এর হাত ধরে চলচ্চিত্র জগতে পদার্পণ করেন তিনি।
শুধু কন্নড় সিনেমা নয়, ২০১৬ সালে ‘ওয়াঘা’ নামক একটি তামিল সিনেমার হাত ধরে তামিল ইন্ডাস্ট্রিতেও আত্মপ্রকাশ করেছিলেন অভিনেত্রী। ২০১৭ সালে ‘পটাকি’ নামের একটি কন্নড় সিনেমায় একজন সাংবাদিকের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় অভিনেত্রীকে।