Home Second Lead রামগড়-বারৈয়ারহাট সড়কে যানবাহনে ডাকাতি

রামগড়-বারৈয়ারহাট সড়কে যানবাহনে ডাকাতি

ছবি সংগৃহীত

নিজামউদ্দিন লাভলু, রামগড়:রামগড়-বারৈয়ারহাট সড়কে প্রায় প্রতি রাতেই যানবাহনে দুর্ষর্ধ ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। ডাকাতদের কবলে পড়ে অনেকেই সর্বস্ব হারিয়েছেন। তাদের হামলায় আহত হয়েছেন বহু যাত্রী ও চালক। তারা ভাঙচুর করে অনেক গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। গত কয়েক মাস ধরে লাগাতার ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ এ পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি। ফলে নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়েই সড়কে যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রী ও চালকদের। এদিকে, অরক্ষিত এ সড়কে আসন্ন ঈদে দূরদূরান্তের ঘরমুখী মানুষের নিরাপদ যাতায়াত নিয়ে ভয় ও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বারৈয়ারহাট থেকে হেঁয়াকো-রামগড় সড়কটি ঢাকা, ফেনী, কুমিল্লাসহ সমতল জেলার সঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলার সড়ক যোগাযোগের মাধ্যম। এ সড়কে প্রতি রাতেই শতাধিক দূরপাল্লার যাত্রীবাহী নৈশকোচসহ অসংখ্য যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করে।

জানা যায়, সড়কের ভুজপুর থানাধীন বাগানবাজার চা-বাগান এলাকা এবং জোরারগঞ্জ থানার কালাপানি নতুন ব্রিজ ও ভাঙ্গাটাউয়ার এলাকাতেই ডাকাতির ঘটনা ঘটছে বেশি। রাস্তার ওপর গাছের টুকরা ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন আটকায় তারা। সংখ্যায় থাকে ১৫-২০ জনের মতো। মুখ ঢাকা থাকে গামছা বা অন্য কাপড় দিয়ে। হাতে থাকে ধারালো দা, ছুরি, চাইনিজ কুড়াল, কিরিচ ও হালকা আগ্নেয়াস্ত্র। যাত্রীবাহী বাসের চেয়ে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, পিকআপ প্রভৃতি ছোট গাড়িগুলোই তাদের মূল টার্গেট। গাড়ির গতিরোধ করার সঙ্গে সঙ্গেই আচমকা হামলা-ভাঙচুর শুরু করা হয়। আতঙ্কিত করতে চালক ও যাত্রীদের এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। পরে অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ সর্বস্ব লুটিয়ে নেয় ডাকাতরা।

গত ২২ মার্চ ভোর রাতে জোরারগঞ্জ থানাধীন কালাপানি নতুন ব্রিজ এলাকায় সংঘটিত ডাকাতির ঘটনার দুই মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঐ ঘটনার শিকার আবুল কাশেম বলেন, ঢাকা থেকে ভাড়া করা প্রাইভেট কারে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও সাত বছরের শিশুপুত্রকে নিয়ে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার তবলছড়িতে নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। কালাপানি নতুন ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে ডাকাত দল তাদের গাড়িটি আটকিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। পরে তারা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। অন্যরা গাড়ির পিছনের ঢালা খুলে বিভিন্ন মালপত্রভর্তি ব্যাগ বের করে নেয়।

অন্যদিকে, ২৬ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভুজপুর থানার বাগানবাজারের রামগড় চা-বাগান এলাকায় রামগড়ের সোনাইপুলের আলম ট্রেডার্সের মালিক মো. আলমের গাড়ি আটকিয়ে চালক ও অন্য ডিএসআরকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা লুটে নেয় সশস্ত্র ডাকাতরা। এর আগে একই স্থানে ১৬ মার্চ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুজপুর থানার দাঁতমারা পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া গত ২৭ মার্চ রাতে জোরারগঞ্জের কালাপানিতে প্রাইভেট কারে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। চালক মঞ্জুর আহমদ রাসেল বলেন, প্রায় প্রতি রাতেই ডাকাতির ঘটনা ঘটছে এ সড়কে। রাতে দূরপাল্লার গাড়িগুলো ডাকাতির শিকার হয়ে গন্তব্যে চলে যাওয়ায় অনেক ঘটনা প্রকাশও পায় না।

এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ওসি হারুণ অর রশিদ জানান, ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধির পর তাদের থানাধীন সড়কের অংশে টহল বাড়ানো হয়েছে। রাতে তিনটি নিয়মিত টহল টিম কাজ করছে। ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের ধরতে জোর তৎপরতা চলছে।