বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আশঙ্কাকে সত্যি করে যুদ্ধের ডঙ্কা বাজিয়ে দিল ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়া। কোভিড অতিমারীতে বিধ্বস্ত বিশ্ব যখন ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরার চেষ্টায় ছিল, তখনই আরও এক রক্তক্ষয়ী অধ্যায় মানব দুনিয়ার সামনে আসতে চলেছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত ঘিরে।
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাশিয়া বৃহস্পতিবার ইউক্রেনকে হামলা করলো। কেন এই হামলা? পেছনে রয়েছে প্রধানত ৫ কারণ।
প্রথমত, রাশিয়া বহুদিন ধরে বলে আসছে, পশ্চিমী শক্তিগুলির ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ইউক্রেন। ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধানরা ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলছেন। প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেন পাশ্চাত্যের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখুক, পছন্দ করেনি মস্কো।
দ্বিতীয়ত, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছেন, ইউক্রেন পশ্চিমী শক্তিগুলির হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। তার কোনও স্বাধীন অস্তিত্বই নেই।
তৃতীয়ত, পুতিন দাবি করেছিলেন, ইউক্রেন ও পাশ্চাত্য দেশগুলিকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, ইউক্রেন কখনও ন্যাটো জোটে যোগ দেবে না। শুধু তাই নয়, ইউক্রেনের নিরস্ত্রীকরণ ঘটাতে হবে। তাকে হতে হবে নিরপেক্ষ রাষ্ট্র।
চতুর্থত, ইউক্রেন একসময় সোভিয়েত রাশিয়ার অংশ ছিল। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের গভীর সাংস্কৃতিক যোগ রয়েছে। ইউক্রেনের নাগরিকদের এক বড় অংশ রুশ ভাষায় কথা বলেন। কিন্তু ২০১৪ সালে দুই দেশের সংঘর্ষ হয়। তারপরে কখনই সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়নি।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের রুশপন্থী প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপরেই আক্রমণ করে আমেরিকা। তাতে ১৪ হাজার মানুষ নিহত হন। সেই যুদ্ধ দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী শত্রুতা সৃষ্টি করে।
দীর্ঘদিন ধরেই ইউক্রেনও রাশিয়ার সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। গত বছরেই সেখানে সেনা মোতায়েন করে রাশিয়া। তাতে উদ্বিগ্ন হয় আন্তর্জাতিক মহল। রাশিয়া বলেছিল, যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে না। নিছক মহড়ার জন্য তাদের সেনা জড়ো হয়েছে ইউক্রেন সীমান্তে। কয়েকদিন আগে এমনও শোনা গিয়েছিল, মহড়া শেষ করে ফিরে আসছে রুশ সেনা। কিন্তু সব জল্পনার অবসান ঘটল বৃহস্পতিবার। এদিন সকালেই ইউক্রেনের পুরোদস্তুর হামলা শুরু করল রুশ সেনা।