বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে রুপিতে লেনদেন শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে । উদ্বোধনের দিনে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে রুপিতে দুটি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি ও আমদানির এলসি খুলেছে। তামিম এগ্রো লিমিটেড ১৬ মিলিয়ন রুপির বেশি রপ্তানির এলসি এবং নিতা কোম্পানি লিমিটেড প্রায় ১২ মিলিয়ন রুপির আমদানির এলসি খুলেছে। দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে রুপিতে লেনদেনের উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম বড় বাণিজ্য অংশীদার ভারত। বাংলাদেশ বছরে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করে আর ২০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। দীর্ঘদিন ধরে দুই দেশের মধ্যে রুপিতে লেনদেনের আলোচনা চলছিল। ব্যবসায়ীরাও অনেক দিন ধরে এ দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এবার তা বাস্তব রূপ পেল। এখন ডলারের পাশাপাশি রুপিতেও বাণিজ্য হবে।
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন সুবিধা চালু হলো। এতে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হলো। এতে উভয় দেশ লাভবান হবে। বাণিজ্যে দুদেশ আরও এগিয়ে যাবে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে দারুণ সফলতা রয়েছে। আমরা চাই- এ পদ্ধতি ব্যবহার করে উভয় দেশ সহজভাবে বাণিজ্য করুক।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আফজাল করিম, ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি আলি রেজা ইফতেখার, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, বিডার চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিঞা, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ ও বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
যৌথভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রুপিতে বাংলাদেশ-ভারত আনুষ্ঠানিক লেনদেন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ যে অঙ্কের পণ্য ভারতে রপ্তানি করবে, একই অঙ্কের পণ্য রুপিতে আমদানি করা যাবে। তিনি বলেন, শুরুতে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ও বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) এবং ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই) ও আইসিআইসিআই ব্যাংক রুপিতে বাণিজ্য লেনদেন নিষ্পত্তিতে অংশ নিচ্ছে।
মেজবাউল হক জানান, ‘টাকা-রুপি কার্ড’ চালু প্রক্রিয়াধীন। এটা নিয়ে কাজ চলছে। এসব কাদের আগ্রহে চালু হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের ইচ্ছায়। ভারত প্রথম প্রস্তাব দিয়েছে। পরবর্তী সময়ে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে ঠিক করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে এখন পর্যন্ত ১৮টি দেশ এভাবে লেনদেন করছে। সম্ভবত বাংলাদেশ ১৯তম।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। এর মধ্যে দুই বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। একই সময়ে বাংলাদেশ ১৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে রুপিতে লেনদেনের প্রক্রিয়া চালু করতে দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনে ভারতের ব্যাংকগুলোতে রুপিতে ‘নস্ট্র অ্যাকাউন্ট’ খুলেছে সোনালী ও ইবিএল। নস্ট্র হিসাব হলো- বিদেশের কোনো ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রায় লেনদেন করতে খোলা হিসাব।