বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
কক্সবাজার: রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আজিজুল হক এবং তার ৩ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদস্যরা উখিয়ার কুতুপালং লাম্বাশিয়া পুলিশ ক্যাম্পের অধীন লোহার ব্রিজ এলাকা শনিবার ভোর ৪টার দিকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে।
১৪নং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন( এপিবিএন) এর অধিনায়ক মো. নাইমুল হক এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহ অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। ঘটনার পরপরই ১৪ এপিবিএন পুলিশ ছায়াতদন্ত পরিচালনা শুরু করে। ইতিমধ্যে ৪ জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। তার মধ্যে গ্রেপ্তার মো. ইলিয়াস আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া আজিজুল হককে শনিবার ভোর রাতে ১টি ওয়ান শুটার গান ও ১টি কার্তুজসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় মো. রশিদ, মো. আনাছ ও নূর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজিজুল হক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মাস্টার মহিবুল্লাহকে হত্যার দুই দিন আগে ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে লাম্বাশিয়া মরকজ পাহাড়ে একটি মিটিং হয়। ওই বৈঠকে আরও ৪ জন উপস্থিত ছিল। তথাকথিত দুর্বৃত্তদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ মহিবুল্লাহকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে মর্মে সেখানে আলোচনা হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, মহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের বড় নেতা হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন সংক্রান্তে বিশেষ ভূমিকা পালন করায় দিনে দিনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়ে উঠেছেন। তাকে থামাতে হবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন এশার নামাজের পর মুহিবুল্লাহকে অফিসে ডাকেন মুরশিদ আমিন। মুহিবুল্লাহকে বলা হয়, তার সঙ্গে কিছু লোক কথা বলবে। তারপর মহিবুল্লাহর অবস্থান সম্পর্কে অপর দুই আসামি মো. আনাছ ও নুর মোহাম্মদকে নিশ্চিত করে এলাকা দ্রুত ত্যাগ করে মুরশিদ আমিন। এ দুজনই রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা করার জন্য দুর্বৃত্তদের ঘটনাস্থলে আসার সংকেত দেয়।
ঘটনার সময় মাস্টার মহিবুল্লাহ ১০-১৫ লোকসহ অফিস রুমে বসেছিলেন। অফিস কক্ষে অস্ত্রধারীরা প্রবেশের পর তাদের একজন বলেন, ‘মহিবুল্লাহ ওঠ’। মহিবুল্লাহ চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালে প্রথম দুর্বৃত্ত একটি, দ্বিতীয় জন দুটি এবং সর্বশেষ জন একটিসহ মোট ৪টি গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মহিবুল্লাহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
এরপর কাছাকাছি থাকা আজিজুল হক, মো. আনাছ ও নূর মোহাম্মদসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য তারা ভিন্ন ভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যায় ও মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়।