বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আন্দামান-নিকোবরের কাছে উত্তাল ভারত মহাসাগরে তিনদিন ধরে দিশাহীনভাবে ভাসমান ১৪২ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে পোর্টব্লেয়ারের একটি আশ্রয় শিবিরে নিয়ে রাখা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা পুলিশকে জানিয়েছে যে কক্সবাজারের কুতুপালং শিবির থেকে পালিয়ে দালালের মাধ্যমে তারা ইন্দোনেশিয়ায় যাচ্ছিলেন।
জাতিসংঘ উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশনার সমুদ্রে ভাসমান রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে আশ্রয় দেয়ার জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে। ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র বাবর বালুচ জানিয়েছেন, ১৪/১৫ দিন আগে নৌকাটি বাংলাদেশ উপকূল ত্যাগ করেছে। পথিমধ্যে বিকল হয়ে নৌকাটি শহিদ দ্বীপের কাছে ভাসছিল।
আন্দামান নিকোবরের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, নৌকাটির সন্দেহজনক গতিবিধির ব্যাপারে স্থানীয় গোয়েন্দা সূত্রে সংবাদ পাওয়ার পর নৌ বাহিনী, উপকূল রক্ষী এবং নৌ পুলিশ অবিলম্বে সেখানে গিয়ে পৌেঁছে এবং রবিবারই নৌকাটি টেনে শহিদ দ্বীপে নিয়ে যায়। যান্ত্রিক ত্রুটিতে নৌকাটি চলাচলের অনুপযোগী। ১৪২ জনের সবাইকে নৌকা থেকে নামিয়ে পোর্ট ব্লেয়ারের কাছে অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে নেয়া হয়েছে।
প্রাণের ঝুঁকিতে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করতে ইউএনএইচসিআর বিভিন্ন দেশকে অনুরোধ করে। পরে আন্দামান-নিকোবর পুলিশ নৌকার যাত্রীদের উদ্ধার করে। যাত্রীদের অধিকাংশ শিশু ও নারী। উত্তাল সমুদ্রে দিশাহীনভাবে ভাসছিল নৌকাটি। প্রাণের ঝুঁকিতে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করতে ইউএনএইচসিআর বিভিন্ন দেশকে অনুরোধ করে।
মূলত রোহিঙ্গাদের বাস মায়ানমারে রাখাইন প্রদেশে। ২০১৭ সালে দেশের সেনা বাহিনীর অত্যাচারের মুখে পড়ে দেশ ছাড়ে রোহিঙ্গারা। বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় দেয়। একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী পাঠাত। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ত্রাণ সামগ্রী আসা প্রায় একপ্রকার বন্ধ।
ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে সমুদ্রপথে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রার চেষ্টা করে। গত বছর থেকে এ অঞ্চলে রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ ৫৭০ জনেরও বেশি মানুষ সমুদ্রে ডুবে নিহত বা নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।