বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: ভারতের কেরালার কোট্টায়ামের সরকারি নার্সিং কলেজের সিনিয়র ৫ পড়ুয়ার বিরুদ্ধে উঠল ভয়ঙ্কর র্যাগিংয়ের অভিযোগ। তিন মাস ধরে নগ্ন করে লাগাতার অত্যাচার করেছে জুনিয়রদের ওপর। র্যাগিংয়ের নামে ভয়াবহ যৌন নিগ্রহ করার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে।
গোপনাঙ্গে নানা ভয়ানক পদ্ধতিতে আঘাত করে তার পর বেধড়ক মারধরও করা হতো জুনিয়রদের। কলেজের তিন জুনিয়র নার্সিং পড়ুয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তৃতীয় বর্ষের পাঁচ পড়ুয়াকে। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে শুরু হয় এই অত্যাচার পর্ব। অত্যাচারিত পড়ুয়ারা প্রত্যেকেই তিরুবন্তপুরমের বাসিন্দা।
তাঁরা জানিয়েছেন, কোট্টায়ামের সরকারি নার্সিং কলেজে ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় এই ভয়ঙ্কর অত্যাচার। তিন মাস ধরে লাগাতার এই অমানবিক অত্যাচার সহ্য করার পর পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই তিন পড়ুয়া। কোট্টায়াম গান্ধীনগর পুলিশ স্টেশনে দায়ের হয়েছে অভিযোগ।
পড়ুয়ারা পুলিশকে জানিয়েছেন, গত তিন মাস ধরে সিনিয়র পড়ুয়ারা তাদের রুমে এসে লাগাতার অত্যাচার করত। ভয় দেখিয়ে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের নগ্ন করে করা হতো। তারপর সিনিয়র পড়ুয়ারা প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের হাত পা ধরে রেখে গোপনাঙ্গে ডাম্বেল বেঁধে ঝুলিয়ে রাখত। সিনিয়রদের কথা না শুনলে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের কপালে জুটত বেধড়ক মার। মেরে রীতিমতো রক্তাক্ত, গায়ে কালশিটে ফেলে দেওয়া হতো।
রিপোর্টে অনুযায়ী, অত্যাচারের তালিকা এখানেই শেষ নয়। আঘাতের পর ক্ষতের উপর লাগানো হতো কোনও না কোনও লোশন। কাটা জায়গায় ওরকম কোনও তরল লেপে দেওয়ার জন্য যখন যন্ত্রণায় চিৎকার করতেন পড়ুয়ারা, তখন মুখেও ঢেলে দেওয়া হতো কিছু না কিছু। আর এই পুরো অত্যাচারের ঘটনাই ছবি তুলে ও ভিডিয়ো রেকর্ড করে রাখত সিনিয়ররা।
পড়ুয়াদের নগ্ন ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মদ খাওয়ার টাকাও তুলতেন সিনিয়ররা। এই অত্যাচার নিয়ে অভিযোগ করলে কেরিয়ারের বারোটা বাজিয়ে দেওয়া হবে বলেও ভয় দেখাতেন অভিযুক্তরা বলে অভিযোগ।
এই অভিযোগ পেয়েই অ্যান্টি-র্যাগিং অ্যাক্টে পাঁচ অভিযুক্ত পড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন— রাহুল রাজ, এনএস জিবা, এনপি বিবেক, রিজিল জিথ এবং স্যামুয়েল জনসন। তাদের কলেজ থেকেও সাসপেন্ড করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।