বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, কক্সবাজার: কাঁচা লবণের ভয়াবহ দরপতনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষীরা। উৎপাদন খরচও উঠছে না। অবস্থাটা কি?
একমণ লবণ তৈরিতে খরচ পড়ে ৪৫০ টাকার মত। মাঠ পর্যায়ে সেই লবণ বেচতে হচ্ছে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা। গত বছর বিক্রি হয়েছিল ৫০০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা। উৎপাদকরা জানালেন, গত বছরের তুলনায় এবারে বিভিন্ন খাতে ব্যয় বেড়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বছর চল্লিশ শতক জমির লগ্নি ছিল ৪০-৫০ হাজার টাকা। তা বেড়ে এবারে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে । বেড়েছে সেচ ও পানির দামও। সেই সঙ্গে বেড়েছে লবণ উৎপাদনের উপকরণ পলিথিনের দাম। গত বছরের তুলনায় এবারে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে প্রচুর। সেই হারে লবণের দাম তো বাড়েইনি, উল্টো কমে গেছে ব্যাপকভাবে। বৈরি প্রকৃতির কারণে সাম্প্রতিককালে লবণ তৈরি হচ্ছে কম। এ অবস্থায় লোকসানের মুখে চাষীরা দিশেহারা। এ অবস্থায় আগামীতে তারা লবণ তৈরিতে আগ্রহ হারাবেন বলে আশঙ্কা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে, প্যাকেটজাত লবণের কেজি ৪৫ টাকা। আর মাঠ পর্যায়ে কাঁচা লবণের কেজি ৫ টাকা বা আরও কম। এই লবণ উৎপাদকদের কাছে থেকে নিয়ে যায় মধ্যস্বত্ত্বভোগী ফড়িয়ারা। তাদের কাছে থেকে কিনে রিফাইনারি মালিকরা। সেখান থেকে আইয়োডাইজড ও প্যাকেটজাত হয়ে কয়েক হাত ঘরে ভোক্তাদের কাছে যায়। আর এভাবে ৫ টাকার লবণ হয়ে যায় ৪৫ টাকা।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) সূত্রে জানা যায়, এবারে পেকুয়া উপজেলায় ১০ হাজার ২৩৫ একর এবং কুতুবদিয়া উপজেলায় ৬ হাজার ৭৫৮.৪৮ একরে লবণ মাঠ তৈরি হয়েছে। তবে সারা দেশে প্রায় ৬৮ হাজার ৫০৫ একর জমিতে লবণ উৎপাদন হচ্ছে। গেল অর্থবছরে লবণের জাতীয় চাহিদা ছিল প্রায় ২৬ লাখ ১০ হাজার টন। উৎপাদন কাজে সরাসরি জড়িত চাষী ৪০ হাজার ৬৯৫ জন। প্রায় ৭০ হাজার শ্রমিক লবণ শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।