বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
স্কুলে পড়ার সময় মার্গারেট থ্যাচারের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন লিজ। কিন্তু প্রতিযোগিতায় জিততে পারেননি। তবে দেশের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বসতে চলেছেন মার্গারেট থ্যাচারের চেয়ারে। আজ মঙ্গলবার শপথ নেবেন লিজ (Liz Truss)।
লিজ ট্রাস যুক্তরাজ্যের ৫৬তম প্রধানমন্ত্রী। আগের দুই মহিলা প্রধানমন্ত্রী–মার্গারেট থ্যাচার এবং থেরেসা মে–ও লিজের (Liz Truss) মতো কনজারভেটিভ পার্টি থেকে ছিলেন।
ভোটের হিসেব—
মোট ভোট – ১৭২৪৩৭টি
ভোটার উপস্থিতি – ৮২.%
লিজ ট্রাসকে ভোট – ৮১,৩২৬
ঋষি সুনাকের ভোটের সংখ্যা – ৬০,৩৯৯
বাতিল ভোট– ৬৫৪টি
ট্রাসের পক্ষে ভোটের শতাংশ – ৫৭.৪%
লিজের শিক্ষা—
৪৭ বছর বয়সী লিজের জন্ম অক্সফোর্ডে। বাবা ছিলেন অঙ্কের অধ্যাপক। মা নার্স। লিজ ট্রাস (Liz Truss) একবার তার বাবা-মাকে ‘বামপন্থী’ হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। তাঁর পরিবার সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন না। কিন্তু প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার যখন লন্ডনের পশ্চিমে মার্কিন পারমাণবিক ওয়ারহেড স্থাপন করার অনুমতি দিয়েছিলেন, তখন পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়ে সমাবেশে গিয়েছিলেন বাবা–মা।
লিজ স্কুলে একটি প্রতিযোগিতায় মার্গারেট থ্যাচারের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু হেরে যান। অক্সফোর্ড থেকে দর্শন, রাজনীতি এবং অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন লিজ। সেইসঙ্গে সক্রিয় ছাত্র রাজনীতি করতেন।
পরিবার—
লিজ ট্রাস ২০০০ সালে হিসাবরক্ষক হিউ ও’লিয়ারিকে বিয়ে করেন। তার দুই কিশোরী কন্যা রয়েছে। বড় মেয়ে ফ্রান্সেসের বয়স ১৬। এবং ছোট মেয়ে লির্বাটির বয়স ১৩ বছর। দুই মেয়ের মায়ের প্রচারে আসত।
রাজনীতি—
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই লিজের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা তৈরি হয়। তিনি একজন লিবারেল ডেমোক্র্যাট হিসাবে রাজনীতি শুরু করেছিলেন। একবার বলেছিলেন, তিনি ১৯৯৪ সালে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করবেন। তারপর তিনি কনজারভেটিভ পার্টিতে চলে যান। তিনি ২০০১ এবং ২০০৫ সালে হেমসওয়ার্থ এবং ক্যাল্ডার ভ্যালি থেকে যথাক্রমে দুটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। দুটোতেই পরাজয় হয় তাঁর।
তিনি ২০০৬ সালে দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের গ্রিনিচ থেকে কাউন্সিলর ভোটে প্রথম জেতেন। তিনি এমপি হওয়ার দু’বছর পর, ২০১২ সালে শিক্ষামন্ত্রী হন। ২০১৪ সালে পরিবেশ সচিবের দায়িত্ব পান।
লিজের পদ—
সংসদীয় আন্ডার সেক্রেটারি (শিক্ষা বিভাগ) (২০১২-২০১৪)
পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রামীণ বিষয়ক রাজ্যের সচিব (২০১৪-২০১৬)
লর্ড চ্যান্সেলর এবং সেক্রেটারি অফ স্টেট ফর জাস্টিস (২০১৬-২০১৭)
ট্রেজারির মুখ্য সচিব (২০১৭-২০১৯)
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য সেক্রেটারি অফ স্টেট এবং বোর্ড অফ ট্রেডের সভাপতি (২০১৯-২০২১)
নারী ও সমতা মন্ত্রী (২০১৯-বর্তমান)
পররাষ্ট্র সচিব (২০২১-বর্তমান)
লিজের প্রতিশ্রুতি—
লিজ ট্রাস নতুন কোনও কর প্রবর্তন না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এবং তিনি কর্পোরেট ট্যাক্সও বাতিল করবেন বলে ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
জয়ের পর লিজ ট্রাস বলেন, “কনজারভেটিভ দলের নেতা নির্বাচিত হয়ে আমি গর্বিত। আমার প্রতি আস্থা রাখার এবং দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় সকলকে ধন্যবাদ। কঠিন অবস্থা থেকে সকলকে বের করে আনতে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ করার কথা দিচ্ছি।” এদিকে হার স্বীকার করে নিয়ে ঋষি বলছেন, “ক্ষমতা অনুযায়ী ব্রিটেনের কনজারভেটিভ সরকারকে সহায়তা করব।”