বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
করোনার টিকা যাতে বেশিদিন শরীরে কার্যকরী হয় সে গবেষণা করতেই এবার স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে ভাইরাস ঢুকিয়ে পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করেছেন উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের ডারহাম ইউনিভার্সিটির গবেষকরা।
প্রি-ক্লিনিকাল স্টেজে এই ধরনের পরীক্ষা হয় ইঁদুর বা পশুদের শরীরে। ভাইরাল স্ট্রেন ঢুকিয়ে তারপর ভ্যাকসিনের ডোজ দিয়ে গুণমান যাচাই করেন বিজ্ঞানীরা। ভ্যাকসিনের প্রভাবে ভাইরাস কতটা নিষ্ক্রিয় হল, কী পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হল সে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেফটি ট্রায়ালও চলে। যদি দেখা যায়, ভাইরাসের প্রভাব কমাতে ভ্যাকসিনের ডোজ কার্যকরী তখনই হিউম্যান ট্রায়াল বা মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য আবেদন করা হয়।
এটা হল ভ্যাকসিন গবেষণা ও পরীক্ষার প্রাথমিক ধাপ। পরবর্তী ধাপ হল ভ্যাকসিনের ডোজ ইনজেক্ট করা যা সাধারণত সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরেই দেওয়া হয়। ভ্যাকসিনে থাকা নিষ্ক্রিয় ভাইরাল স্ট্রেন শরীরে ঢুকে ইমিউন সিস্টেমকে কতটা শক্তপোক্ত করছে সেটাই পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট দেওয়া হয়। ডারহামের গবেষকরা বলছেন, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির উপরে ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করবে সে পরীক্ষা এখনও হয়নি বিশ্বের কোথাও। করোনাভাইরাস শরীরে ঢুকে যেভাবে তার জিনের গঠন বিন্যাস বদলে ফেলছে তাতে ভ্যাকসিন কতদূর কার্যকরী হবে সেটা জানাও দরকার। সে জন্যই শরীরে ভাইরাস ঢুকিয়ে তার পরীক্ষা করা প্রয়োজন। এই গবেষণার জন্য বছর কুড়ির দুই তরুণকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে খবর।
তবে ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্ত নৈতিকতার দিক থেকে কতটা সঠিক সে নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। শরীরে ভাইরাস ঢোকালে প্রাণ সংশয়ের সম্ভাবনা থাকবে কিনা সে প্রশ্নও জোরালো হয়েছে। এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নানা মতামত দিয়েছেন। নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বায়োকেমিস্ট সীমা শাহ বলেছেন, যে কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণায় চ্যালেঞ্জ নেওয়া জরুরি। ভিন্ন পথে গিয়ে পরীক্ষা না করলে সফলতা কখনও আসে না। একপেশে পরীক্ষা নিরীক্ষায় সিদ্ধান্ত নিলে তা আজীবন কার্যকরী নাও হতে পারে। তবে নিরাপত্তার দিক খতিয়ে দেখে অল্পসংখ্যক মানুষের উপরে আগে এই পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে বলে মনে করেছেন সীমা।