Home Second Lead ইমরানের পতনের পর যিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন

ইমরানের পতনের পর যিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন

শাহবাজ শরিফ’

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

‘ইমরান খান আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নন। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শাহবাজ শরিফ’। বুধবার বিকালে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই ঘোষণা করেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাবল ভুট্টো।

পাকিস্তানের সংসদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের  বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছেন বিরোধীরা। কিন্তু ভোটাভুটির আগেই বুধবার পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাবল ভুট্টো ঘোষণা করলেন, সংসদে ইমরান সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন। বিরোধী নেতা শাহবাজ শরিফ শীঘ্র প্রধানমন্ত্রী হবেন। শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই।

এদিন সকালে ইমরানের তেহরিক ই ইনসাফ পার্টির অন্যতম শরিক মুত্তাহিদা কোয়ামি মুভমেন্ট ঘোষণা করে, তারা বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। ইতিমধ্যে ইমরানের  নিজের দলের কয়েকজন সাংসদও বিরোধীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। বুধবার বিকালে সাংবাদিক বৈঠক করে বিলাবল বলেন, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কারণ তারা ইমরান খানের সরকারের পতন ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিলাবল জানান, আস্থাভোট হবে বৃহস্পতিবার।

তাঁর কথায়, “ইমরান গরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। তিনি আর প্রধানমন্ত্রী নন। বৃহস্পতিবার সংসদের অধিবেশন বসবে। এদিনই ভোটাভুটি হোক।” বিলাবলের দাবি, তাঁরা স্বচ্ছ প্রশাসন তৈরি করবেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হবে। দেশের আর্থিক সংকট কাটবে।

পাকিস্তানের বাইরে শাহবাজ বিশেষ পরিচিত নন। তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন শুনে নানা মহলে আগ্রহ ছড়িয়েছে তাঁকে  নিয়ে।

শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই। ২০১৮ সালের অগাস্ট মাস থেকে তিনি পাকিস্তানের সংসদে বিরোধী দলনেতার পদে আছেন। পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-এর সভাপতি শাহবাজ তিন দফায় পাকিস্তানের পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ওই প্রদেশে তিনিই সবচেয়ে বেশি দিন মুখ্যমন্ত্রীর পদে থেকেছেন।

লাহোরে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচিলর অব আর্টস ডিগ্রি লাভ করেন শাহবাজ। পরে তিনি পারিবারিক ব্যবসায় যুক্ত হন। ১৯৮৫ সালে তিনি লাহোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হন।

১৯৮৮ সালে পাকিস্তানের পাঞ্জাবে প্রাদেশিক নির্বাচনে শাহবাজ জয়ী হন। জাতীয় সংসদের সদস্য হন ১৯৯০ সালে। ১৯৯৩ সালে ফের পাঞ্জাব বিধানসভায় নির্বাচিত হন। সেবার তিনি হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। ১৯৯৭ সালে তিনি প্রথমবার ওই প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন।

১৯৯৯ সালে পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থান ঘটে। পরিবারের সকলের সঙ্গে শাহবাজ চলে যান সৌদি আরবে। ২০০৭ সালে তিনি দেশে ফেরেন। ২০০৮ সালে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক ভোটে ফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) জয়ী হয়। শাহবাজ ফের ওই প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০১৩ সালে তিনি তৃতীয়বার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০১৮ সাল অবধি তিনি ওই পদে ছিলেন। ওই বছরে তিনি পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের বিরোধী দলনেতা হন।

গত ২৮ মার্চ তিনি সংসদে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (ন্যাব) শাহবাজ ও তাঁর ছেলে হামজা শরিফের ২৩ টি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে টাকা তছরুপের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে ন্যাব। গত বছর এপ্রিলে লাহোর হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দেয়।

১৯৫১ সালে পাঞ্জাবে শাহবাজের জন্ম হয়। তাঁর পিতা মহম্মদ শরিফ ছিলেন সম্পন্ন ব্যবসায়ী। তাঁর আদি বাড়ি ছিল কাশ্মীরের অনন্তনাগে। পরে তিনি পাঞ্জাবের অমৃতসর জেলায় বসবাস করতে থাকেন। ভারত ভাগের পরে তাঁদের পরিবার চলে যায় লাহোরে।