বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সাম্প্রদায়িক হানাহানির আড়ালে লুকিয়ে আছে এক অন্য ভারতবর্ষ। সেখানে খান আর শাহদের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। একই ছাদের তলায় বাস করেন হিন্দু আর মুসলিম। সেই আড়ালের একটুকরো ছবিই উঠে এল বিহার থেকে। রামদেবের শেষশয্যায় কাঁধ দিলেন মহম্মদ রিজওয়ানরা।
পাটনায় একটি হোসিয়ারি আউটলেট রয়েছে মহম্মদ রিজওয়ান খানের । সেখানেই কাজ করতেন রামদেব শাহ নামের এক ব্যক্তি। সম্প্রতি তাঁর মৃত্যু হয়েছে। হিন্দু কর্মচারীর শেষশয্যা কাঁধে তুলে নিয়েছেন রিজওয়ান ও তাঁর পরিবার। ব্যবস্থা করেছেন সৎকারের।
এই ঘটনার একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে দেখা গেছে, কাঁধে করে ওই বৃদ্ধ কর্মচারীর দেহ বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন মহম্মদ রিজওয়ান খান এবং তাঁর পরিবারের অন্যান্যরা।
তাঁদের ব্যবসায় দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে কাজ করেছেন রামদেব। গত সপ্তাহে যখন তাঁর মৃত্যু হয়, বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। এতদিন কাজ করতে করতে রামদেব একপ্রকার রিজওয়ানদের ঘরের লোক হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যু খান পরিবারে পারিবারিক শোকের সমান। তাই শেষযাত্রায় পাশে থেকেছেন তাঁরাও, হেঁটেছেন পায়ে পা মিলিয়ে। হিন্দু ধর্মের যাবতীয় নিয়মকানুন মেনেই খান পরিবার তাঁদের কর্মচারীর দেহ সৎকার করেছে। তাতে কোনও ত্রুটি ছিল না। সৎকারের সময় শুধু খানেরাই নন, তাঁদের অনেক মুসলিম প্রতিবেশীও উপস্থিত ছিলেন।
রিজওয়ান বলেন, উনি আমার বাবার মতো ছিলেন। আমার দোকানে যখন উনি প্রথম এসেছিলেন কাজ খুঁজতে, ওঁর বয়স ছিল ৫০-এর কাছাকাছি। আমি বলেছিলাম আপনি তো ভারী কোনও কাজ সেভাবে করতে পারবেন না। তখন উনি আমায় বলেছিলেন অ্যাকাউন্টসের কাজ করতে পারবেন ভালমতো। সেই থেকেই আমাদের দোকানের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন তিনি।
বয়স বেড়েছে, কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে হারিয়েছিলেন রামদেব। তবু তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেননি রিজওয়ানরা। তাঁকে বিশ্রাম নিতেই বলতেন তাঁরা। এমনকি মাইনেও দেওয়া বন্ধ করেননি কেউ। শেষযাত্রায় তাঁরাই সঙ্গী হলেন হিন্দু এই বৃদ্ধের।