বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: শেয়ারবাজার চাঙ্গা করতে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে রবিার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে এ সংক্রান্ত একগুচ্ছ নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৈঠকে বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বেশকিছু দিকনির্দেশনা দেন মন্ত্রী। তিনি পরিষ্কার করে বলে দেন, করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারের খারাপ অবস্থা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। যে করেই হোক বাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে
সূত্র মতে, সাম্প্রতিক সময়ে অব্যাহতভাবে দরপতনে খাদের কিনারে যাচ্ছিল দেশের পুঁজিবাজার। সেখান থেকে টেনে তুলতে নানা উদ্যোগ হাতে নেয় দেশের আর্থিক খাতের অভিভাবক অর্থ মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি মার্জিন ঋণের সীমা বাড়িয়েছে। পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি’র মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগকে পুঁজিবাজারে এই প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫০ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়িয়ে তহবিলের আকার দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্তও হয়েছে। সোমবারই এই তহবিল থেকে বিনিয়োগ করা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে বেশকিছু মতপার্থক্যের ইস্যু ধরেই গত সেপ্টেম্বর থেকে বাজারে সূচক পড়তে থাকে। এরপর যোগ হয়- ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানি ও খাদ্যমূল্যের দর বৃদ্ধি, মুদ্রার দরপতন, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক ধস, করোনা জনিত বিদেশিদের বিনিয়োগে অনাগ্রহসহ নানা বৈশ্বিক ইস্যু। এতে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থার সংকট তৈরি হয়। ফলে শেয়ারবাজারে শেয়ারের বিক্রি বেড়ে যায়। একই সঙ্গে সূচকও কমতে থাকে।
এই পরিস্থিতিতে বৈঠকে পুঁজিবাজারে সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবিকে বাজারে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে ব্যাংকগুলো আইসিবি’র মাধ্যমে পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ করবে, সেটাকে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগসীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাইরে রাখা হবে। গত কয়েক বছর ধরেই পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। একটি ব্যাংক কত টাকা বিনিয়োগ করতে পারে, তাকে বলে এক্সপোজার লিমিট।
বর্তমানে কোনো শেয়ারের ক্রয়মূল্য অথবা বাজারদর যেটি বেশি, সেটি এক্সপোজার লিমিট হিসেবে গণ্য হয়। তবে বিএসইসি চাইছে শেয়ারের ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ হোক।
আবার কোনো ব্যাংক নিজে যে বিনিয়োগ করে, সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য যে টাকা দেয়, আইসিবিকে যে ঋণ দেয়, সবই এক্সপোজার লিমিটের ভেতরে পড়ে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য আইসিবিকে দেয়া ১৫৩ কোটি টাকার যে তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেটির মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তহবিলের আকারও বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করা হবে।