- শ্রমিকরা বাগানের যাবতীয় সুবিধা ভোগ করেন, কিন্তু কাজে স্বাচ্ছন্দ বাইরে
- প্রতিদিন অনুপস্থিত থাকেন দেড় শ’ শ্রমিক
মাসুদ লস্কর, হবিগঞ্জ থেকে: : শ্রমিকদের নানা দাবিতে ৩৮ দিন বন্ধ থাকায় হবিগঞ্জের নোয়াপাড়াস্থ বৈকুন্ঠপুর বাগানে উৎপাদন মার খেয়েছে। ২০২০ সালে যেখানে ১,৭৫,০০০ কেজি পাতা পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে ২০২১ সালে তা নেমে এসেছে ১,৫৯,০০০ কেজিতে, অথচ অনেক বাগানে উৎপাদন বেড়েছে গত বছরে।
হবিগন্জের নোয়াপাড়াস্হ ৭ নং বাগান বৈকুন্ঠপুর। বাগানটির আগে মালিক ছিল বিডি মুখার্জি পরিবার। বর্তমানে আমানত শাহ গ্রুপ।
অনসন্ধানে জানা যায়, দিলীপ কেউটে নামক এক শ্রমিকের আবাসন ইস্যু নিয়ে মুলত শ্রমিকদের আন্দোলনের সূত্রপাত।
বৈকুন্ঠপুর চা বাগানের ম্যানেজার শামসুল হক ভুঁইয়া’ এ প্রসঙ্গে বিজনেসটুডে২৪ কে বললেন, বাগান ও শ্রমিকদের উন্নয়নে বাগান মালিকদের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও কিছু অকৃতজ্ঞ শ্রমিকের কারণেই চা শিল্প হুমকির মুখে। বললেন, নানা অজুহাতে এখানে শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে মালিক পক্ষ প্রশাসনের সহায়তায় সমঝোতার মাধ্যমে বাগান চালু করে। কিন্তু শ্রমিকরা আন্তরিক সহাযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসেনি। প্রতিদিন অনুপস্থিত থাকেন একশ থেকে দেড় শ’ শ্রমিক। দেশের আর কোন বাগানে এমনটি হওয়ার নজির নেই। তিনি মনে করেন, শ্রমিকরা যদি সর্বাত্মকভাবে বাগানের কাজে সহযোগিতা করে এবং চুরি বন্ধ করে তবে উৎপাদন বাড়বে।
অনসন্ধানে আরও জানা যায়, শ্রমিকরা বৈকুন্ঠপুর বাগানের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও তারা স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন বাইরে কাজ করতে। কারণ বাইরে কাজ করলে আয় বেশি। তাদের দৌরাত্ম্য এত বেশি যে বাগান প্রশাসন তাদেরকে কাজের কথা বললে অসদাচরণ করে। এমন কি দলবদ্ধভাবে আক্রমণ করতেও উদ্যত হয়।
বাগানের যাবতীয় সুবিধা ভোগ করে বাইরে কাজ করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন শ্রমিকরাও। তবে, তারা বলেছেন ‘বাইরে তো ইনকাম বেশি।’ বাগানে কাজ করে যে বেতন তা দিয়ে সংসার চালানো দায়। তাই বাইরে কাজ করা ছাড়া কোন উপায় নেই।
শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বাগানের গাছপালা ও কারখানা থেকে চা পাতা পাচারের। এক শ্রমিক বললেন, এখানে আমরা কাজ করি। এখান থেকে পাতা নিলে সমস্যা হবে কেন?
বাগান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বৈকুন্ঠপুর বাগান পরিস্থিতির উন্নয়নে কারখানা আধুনিকায়নে নতুন যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ করা হবে। ইতিমধ্যে বাগানে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
দেশে মোট চা বাগান ১৬৭টি। এগুলোর মধ্যে হবিগঞ্জে ২৫টি।