বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: প্রয়াত প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সন্জীদা খাতুন। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
সন্জীদা খাতুন দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিস, নিউমোনিয়া এবং কিডনি রোগে ভুগছিলেন । তাঁকে রাখা হয়েছিল আইসিইউতে। মঙ্গলবার দুপুর ৩টে ১০ নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। এ দিন তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেকেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। তাঁরা জানিয়েছেন, রমনা বটমূলে ১লা বৈশাখের অনুষ্ঠান তাঁকে ছাড়া ফাঁকা লাগবে। আর মাত্র ১০ দিন পরেই তাঁর ৯২তম জন্মদিন পালিত হতো। তার আগে এই সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে আবেগ চেপে রাখতে পারেননি তাঁর গুণমুগ্ধরা।
বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনী। ২০২১ সালে তিনি পেয়েছিলেন পদ্মশ্রী পুরস্কার । বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে দিয়েছিল দেশিকোত্তম পুরস্কার । এছাড়াও তিনি পেয়েছেন অনেক পুরস্কার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছেন তিনি।
তাঁর পরিচিতি মুলত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে একুশে পদক, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার এবং রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার । ১৯৮৮ সালে কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইন্সটিটিউট তাঁকে দিয়েছিল ‘রবীন্দ্র তত্ত্বাচার্য’ উপাধি। ২০২১ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে। শারীরিক অবস্থার কারণে এই পুরস্কার নিতে আসতে পারেননি তিনি। তাই, তাঁর বাড়িতে গিয়ে এই পুরস্কার তুলে দিয়ে আসেন বাংলাদেশের তৎকালীন হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি জগতের অন্যতম অগ্রণী ব্যক্তিত্ব সন্জীদা খাতুনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল। তাঁর বাবা কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক। শিক্ষকতা দিয়ে সন্জীদা খাতুনের কর্মজীবনের শুরু । তবে তাঁর পরিচিতি রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হিসেবেই। জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদেরও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন সন্জীদা খাতুন। একাধিক গ্রন্থও লিখেছেন তিনি।
সন্জীদা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক, ১৯৫৫ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৭৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। শিক্ষকতা দিয়েই তাঁর কর্মজীবন শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছেন তিনি।