বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের অশুতোভয় সংগঠক, জাতীয় সংসদের চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য, মেধাবী পার্লামেন্টারিয়ান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ, চট্টগ্রামের গৌরব, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের কার্যকরী সভাপতি জননেতা মাঈনুদ্দীন আহমদ খান বাদল-এর মরদেহ দেশে আসবে আগামীকাল শুক্রবার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাংসদের ছোট ভাই মনির উদ্দিন আহমদ খান। বাড়ির পাশের পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত পিতা-মাতার পাশেই এমপি বাদলের দাফনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, মরদেহ দেশে পৌঁছলেই জানাজার সময় নির্ধারণ করা হবে। ভারতের বেঙ্গালুরুতে নারায়ণ হৃদরোগ রিচার্স ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তিনি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি …রাজিউন)। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েসহ আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন। তার জন্ম ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি। এছাড়াও শোক জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঈনুদ্দিন খান বাদলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। স্ট্যাটাসটি যার চোখে পড়েছে তাকেই নাড়া দিয়েছে।
নওফেল চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র মহিউদ্দীন চৌধুরীর ছেলে। রাজনীতিতে মহিউদ্দিনের বিশ্বস্ত ছিলেন বাদল। দুজন দু’দল করলেও তাদের মধ্যে হৃদ্যতা ছিল অসাধারণ। তারা দুজনে ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। মহিউদ্দিনের যেকোনো পারিবারিক অনুষ্ঠানে থাকতেন বাদল। তার পরিবারের সঙ্গে বাদলের ছিল নিবিড় যোগাযোগ। সাংসদ বাদলের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে ভেঙে পড়েছেন মহিউদ্দিনপুত্র নওফেল। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে পেইজে বাদলকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেন নওফেল। ‘আবারও পিতৃহারা হলাম’ বলে ওই স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেন তিনি।
নওফেল লেখেন, ‘মঈনুদ্দিন খান বাদল। বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় নেতা, অনলবর্ষী বক্তা, সংসদ সদস্য, বীর চট্টলার গৌরব, আরও অনেক কিছুতেই তাকে সম্বোধন করা যায়। না ফেরার দেশে তিনি আজ থেকে থাকবেন (ইন্না… রাজিউন)। মনে হচ্ছে যেন আবারও পিতৃহারা হলাম।’
এদিকে, সাংসদ বাদলের গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালীর সারোয়াতলীর খান মহলের সামনে চলছে শেষ বারের মতো শ্রদ্ধার সাথে বিদায় জানানোর আয়োজন। খান মহলে অন্দরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তার ভাই বোন স্বজনরা। ৫ ভাই ও ৩ বোনের মাঝে বাদল তৃতীয়।