বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের মামলা নিয়ে শেখ হাসিনা আমলের মতো বাণিজ্য চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সংবাদ সম্মেলনে।
‘চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড পরবর্তী পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন: পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মহাম্মদ আরও বলেন, ‘আলিফ হত্যাকাণ্ডে অজ্ঞাতনামা আসামি বাণিজ্য চলছে। পাইকারি দরে মামলা হচ্ছে। হরিজন কলোনি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এর শিকার হচ্ছে। হিন্দু পরিচয়ের কারণে অনেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।’
‘ভারত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব ঘটনা সেই অপপ্রচারকে শক্তিশালী করছে’ বলে অভিযোগ করে আনু মহাম্মদ বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজ ব্যবহার না করে তদন্ত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।’ এছাড়াও গ্রেপ্তারকৃত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ সব অভিযুক্ত ও আটক ব্যক্তিদের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতেও আহবান জানিয়েছেন তিনি।
গত ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ পরবর্তী সহিংসতায় নিহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। চট্টগ্রাম আদালতের পাশেই রাস্তার ওপর পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাঁকে। চিন্ময় দাসের অনুসারী ও ইসকন সমর্থকেরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়। তবে এই ঘটনায় ইসকনের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করেছে ইসকন বাংলাদেশ।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘মামলা দায়ের ও তদন্ত প্রক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালিত না হওয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি। মামলাগুলোতে গণহারে আসামি করা ও তদন্ত পরিচালনা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ করে আমাদের মনে হয়নি যে, এই হত্যার সঠিক বিচারের প্রশ্নে এর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন বিভাগ আন্তরিক। আমরা চট্টগ্রামে পরিদর্শন শেষে ঢাকায় ফেরার পরে স্থানীয় থানার একজন এসআই সেবক পল্লিতে গিয়ে হরিজনদের হুমকি দিয়ে এসেছেন এবং বলেছেন যে, তাঁরা যদি প্রকৃত অপরাধীদের ধরিয়ে দেন তবে যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবেন তিনি। হিন্দু ধর্মাবলম্বী সাধারণ মানুষজনও গ্রেপ্তার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।’
জ্যোতির্ময় অভিযোগ করে বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকে মামলা দায়ের, তদন্ত কোনোটিই সঠিক পথে এগোচ্ছে না এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আগের মতোই সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। এ ছাড়া, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে বলে কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।