Home সারাদেশ ইংরেজিতে মাস্টার্স কলকাতার বউ, আর বয়সে ছোট সাতক্ষীরার জামাই

ইংরেজিতে মাস্টার্স কলকাতার বউ, আর বয়সে ছোট সাতক্ষীরার জামাই

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

সাতক্ষীরা: ফেসবুকে পরিচয় সূত্রে প্রেমকে বাস্তবে রূপ দিতে ভারত থেকে বাংলাদেশের সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জেঠুয়া গ্রামে এসেছেন এক তরুণী। নিজের চেয়ে কম বয়সের এবং কম শিক্ষিত প্রেমিককে বিয়ে করতে প্রথমে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এরপর দীর্ঘদিনের প্রেমিককে বিয়ে করে ঘর সংসার করছেন বহ্নিশিখা ঘোষ ওরফে ফারজানা ইয়াসমিন। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক ভাবে আলোচিত হয়েছে। তবে তিনি অভিযোগ করেন, স্থানীয় একটি কুচক্রের সহযোগিতায় তার পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবা বিনয় কৃষ্ণ ঘোষ ও পুলিশ অফিসার দুই মামা প্রতিনিয়ত তাকে এবং স্বামীসহ পরিবারকে হয়রানিসহ হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এতে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এতিম ও দরিদ্র প্রেমিকের মাতাসহ এলাকার মানুষদের সহযোগিতায় ভালভাবে দিন কাটছে ভারতীয় তরুণী ফারজানা ইয়াসমিন (২৭) এবং ইব্রাহীম হোসেন ওরফে মুন্না (২৫) দম্পতির। ফারজানা ইয়াসমিন জানান, তার পিতার নাম বিনয় কৃষ্ণ ঘোষ এবং বাড়ি কলকাতার ব্যারকপুরে তালপুকুর এলাকায়। তিনি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। প্রায় ৪ বছর আগে ফেসবুকে তার পরিচয় হয় তালা উপজেলার জেঠুয়া গ্রামের ইব্রাহীন হোসেন মুন্নার সাথে। পরিচয়রে একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেম গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন প্রেম করার পর ফারজানা পাসপোর্টের মাধ্যমে জেঠুয়া গ্রামে আসেন। গত ২৮ মার্চ সাতক্ষীরা নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে অ্যাফিডেভিট করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বহ্নিশিখা ঘোষ নাম পরিবর্তন করে ফারজানা ইয়াসমিন নাম গ্রহণ করেন। পরে প্রেমিক মুন্নাকে মুসলিম আইনে রেজিস্ট্রি বিয়েসহ আরও একটি অ্যাফিডেভিট করে বিয়ে করেন।

ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, মুসলিম হতে পেরে আমি গর্বিত। আমি আর কখনও ভারতে ফিরে যাবো না। এদেশে স্থায়ী ভাবে থাকার জন্য নাগরিকত্ব পেতে সরকারের নিকট আবেদন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, বিয়ের পর জেঠুয়া গ্রামে স্বামীর সাথে দেড় মাস সংসার করে আমি কলকাতায় আমার বাবার বাড়িতে ফিরে যাই। সেখানে যেয়ে পিতা ও মাতাকে বিয়ের কথা জানালে তারা স্বামীকে তালাক দেবার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি রাজি না হওয়ায় আমার পিতা ও মাতাসহ ভারতের পুলিশ অফিসার মামা বিকাশ পাল, গোবিন্দ পাল ও অপর মামা শম্ভুনাথ পাল ব্যপকভাবে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা আমাকে পিটিয়ে ও জোর করে ওষুধ সেবন করিয়ে আমার গর্ভের সন্তানকে হত্যা করে। তাদের অত্যাচর সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ অবস্থায় আমি আবারও জেঠুয়া গ্রামে স্বামীর বাড়িতে চলে আসি। এখানে থাকাকালে এলাকার একটি একটি চক্র আমার ও আমার স্বামীর পরিবারের কাছে অনৈতিক দাবি করতে থাকে। আমরা সেই দাবি পুরণ না করায় চক্রটি ক্ষুব্ধ হয়ে ভারতে আমার পিতার সাথে যোগাযোগ করে। তারা আমার পিতার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এবিষয়ে ফারজানার স্বামী মুন্না বলেন, আমি বয়সে ছোট ও লেখাপড়ায় কম হলেও ফারজানা ইয়াসমিন আমাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। তাকে নিয়ে আমি খুবই সুখে রয়েছি। একটি মহল আমাকে আমার মা রুবিনা বেগম, মামা ফারুক হুসাইন এবং নিকট আত্মীয়দের নানাবিধ হুমকি দিচ্ছে। কূচক্রি মহল আমাদের হয়রানি করার জন্য নানান অপপ্রচার চালায়। এরফলে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ প্রশাসন ও তালা থানা পুলিশ আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২-৩ দিন আগে থানায় নিয়ে ডাকে। পরে আমাদের মধ্যে খারাপ কিছু না পাওয়ায় এবং ঘটনার সবকিছু জেনে পুলিশ আমাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন।