চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) নিয়ে যে কোন ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সাংবাদিক নেতারা।
গতকাল বৃহষ্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত এক সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সিইউজের বিরুদ্ধে নির্বাচন পরবর্তী ষড়যন্ত্র ও মামলার বিষয়ে সদস্যদের অবহিত করতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাংবাদিক ইউনিয়নের সুষ্ঠু নির্বাচন ও ফলাফলের পর নতুন কমিটির দায়িত্ব পালনকে বাধাগ্রস্ত করতে কুচক্রী মহল যে ষড়যন্ত্র করছে সিইউজের ৬০ বছরের ইতিহাসে এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেনি। সাংবাদিক ও সাংবাদিকতার শত্রু এ ষড়যন্ত্রকারীদের যে কোন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে সাংবাদিক সমাজ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মাত্র দুইজন কুচক্রী সদস্য নিজেদের চাঁদাবাজি ও অনিয়মের দায় আড়াল করতে একজন বহিষ্কৃত সদস্যকে দিয়ে সিইউজের মতো ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত চারশতাধিক সাংবাদিকের লড়াকু সংগঠন নিয়ে এ ষড়যন্ত্র টিকবে না।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলী। যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজে সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সহসভাপতি শহীদ উল আলম, মোস্তাক আহমেদ, আবু তাহের মোহাম্মদ, দৈনিক জনকণ্ঠের যুগ্ম সম্পাদক মোয়াজ্জেমুল হক, বিএফইউজের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসিফ সিরাজ, তপন চক্রবর্তী, সিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নির্মল চন্দ্র দাশ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ নুর উদ্দিন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক আপ্যায়ন সম্পাদক রোকসারুল ইসলাম, বিএফ্ইউজে সদস্য আজহার মাহমুদ, সিইউজের টিভি ইউনিটের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদুল হক, সিইউজের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আহমেদ কুতুব, সাংবাদিক বিশ্বজিত বড়ুয়াসহ বিএফইউজে, সিইউজে ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বর্তমান ও সাবেক নেতারা। উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি মনজুর কাদের মনজু, সিইউজের সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটো, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের আপ্যায়ন সম্পাদক আইয়ুব আলী, প্রচার সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, সিইউজের অর্থ সম্পাদক কাশেম শাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইফতেখার ফয়সাল, নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ মহরম হোসাইন, দৈনিক আজাদীর ইউনিট প্রধান খোরশেদ আলম, দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশের ইউনিট প্রধান স ম ইব্রাহিম, দৈনিক প্রিয় চট্টগ্রামের ইউনিট প্রধান বিশু রায় চৌধুরী, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন-চট্টগ্রাম’র সভাপতি মনজুরুল আলম মঞ্জুসহ সিইউজের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ আলী বলেন, গেল ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাচনে স্বতষ্ফুর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। লাইন শেষ না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের পরও ভোট নিতে হয়েছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটিকে। এ ধরণের উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রায় চারশ’ ভোটারের রায়কে অসম্মান করে যারা ষড়যন্ত্রে মেতেছে সাংবাদিক সমাজ তা রুখে দিবে। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস বলেন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব থেকে বিতাড়িত হয়েছেন কুচক্রীদের মূল হোতা। এখন সিইউজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে সিইউজের দরজাও আজীবন তার জন্য বন্ধ হয়ে যাবে।
সিইউজে সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের স্থানীয় একটি দৈনিকে ৭২ জন সাংবাদিক চাকুরিচ্যুতির নোটিশ পেয়েছেন। অন্য একটি দৈনিকে নিয়মিত বেতন দেয়া হচ্ছে না। নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন নিয়ে জটিলতা রয়ে গেছে। টেলিভিশন সাংবাদিকদেরও ওয়েজ বোর্ড করা হয়নি। সাংবাদিকদের এ ধরণের ক্রান্তিকালে লড়াকু সংগঠন হিসেবে সিইউজে যখন জোরালো আন্দোলন শুরু করার কথা তখন মামলা দিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা অতীতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও সিইউজের মতো দু’টি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মধ্য বিভেদ সৃষ্টি করেছিলো। ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের বিদায় দিয়েছে। ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের সকল সংকটে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও সিইউজে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে।
-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি