বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
টানা দু’বছর কোভিডের ধাক্কার পর বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা ছিলই। মন্দার মেঘ ঘনাচ্ছিল বিশ্ব অর্থনীতির উপর। বলা হচ্ছিল, ২০২৩ সালে গভীর মন্দা গ্রাস (Great Depression) করবে গোটা দুনিয়াকে। এই সব সাত সতেরো আশঙ্কার মধ্যেই আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক (Silicon Valley Bank) ডুবেছে। এতটাই খাদে পড়েছে যে বিলেতে তাদের ব্যবসা নাম মাত্র ১.২ পাউন্ডে বেচে দিতে বাধ্য হল সিলিকন ভ্যালি। তা কিনে নিল এইচএসবিসি (HSBC)। সোমবার এই ঘোষণা করেছে এইচএসবিসি ও ব্রিটিশ সরকার।
সিলিকন ভ্যালির ব্যবসা যে ডুবেছে তা শুক্রবার স্পষ্ট হয়ে যায়। তার পরই আন্তর্জাতিক বাজারে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। দুনিয়া জুড়ে বেশ কিছু প্রযুক্তি সংস্থা ও লাইফ সায়েন্সেস প্রতিষ্ঠানের টাকাপয়সা ছিল এই ব্যাঙ্কে। ব্রিটেনের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও টাকা রেখেছিল সিলিকন ভ্যালিতে। ফলে ব্যাঙ্ক ডোবার খবর পেয়ে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটিশ ট্রেজারি ও এইচএসবিসি ওই ব্যাঙ্কের সঙ্গে যৌথ আলোচনা করে হস্তান্তর চূড়ান্ত করে ফেলে। গোটা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় জড়িত রয়েছে ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডও।
পরে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টা জানিয়েছেন, “সরকারের কোনও টাকা ডোবেনি। ক্রেতা বা উপভোক্তাদের যে আমানত ছিল তার নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করা হয়েছে। অর্থাৎ ক্রেতারা এর পর স্বাভাবিক ভাবেই ব্যাঙ্কের কাজকর্ম করতে পারবেন”। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গোটা আলোচনা শেষ করেছে বিলেতের সরকার। জেরেমি হান্ট এদিন বলেন, “খুব কম সময়ে এটা আমরা করতে পেরেছি সেটাই ভাল ব্যাপার।”
এইচএসবিসি-র ফোকাস বরাবরই ছিল এশিয়ার দেশগুলি। এদিন তারা জানিয়েছে, সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের ঋণ রয়েছে সাড়ে ৫ বিলিয়ন পাউন্ডের। ব্যাঙ্কে ৬.৭ বিলিয়ন পাউন্ডের আমানত রয়েছে। এই কৌশলগত অধিগ্রহণের ফলে বিলেতে এইচএসবিসি ব্যাঙ্কের ব্যবসা বাড়বে বলেই আশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাদের চিফ এক্সিকিউটিভ নোয়েল কুইন। তাঁর কথায়, “এতে এইচএসবিসি-র ব্যাঙ্ক শাখা বাড়বে এবং তাদের কাজের ক্ষেত্রে প্রসারিত হবে। ”
সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের সদর দফতর ক্যালিফোর্নিয়ায়। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে তাদের বেশ কয়েকজন ক্রেতা ব্যাঙ্ক থেকে বড় অঙ্কের টাকা তুলে নেওয়ার কারণেই তা ডুবে যায়। এর পর বাজার থেকে টাকা তোলার চেষ্টা করেও তারা ব্যর্থ হয়। ২০০৮ সালের পর আমেরিকায় এই নিয়ে দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটে গেল ব্যাঙ্ক-ব্যবসায়।
অনেকের মতে, টাকা তুলে নেওয়ার এই প্রবণতা ভাল লক্ষণ নয়। তা ছোঁয়াচে। একজনকে দেখে আর এক জন শুরু করে। সিলিকন ভ্যালি কাণ্ডের সংক্রমণ রুখে দেওয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ সব দেশের সামনে।