বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
১০ দিন ধরে ভারতের উত্তরকাশীতে অন্ধকার সুড়ঙ্গে আটক ৪১ শ্রমিকের সাথে উদ্ধারকারি দলের ব্যবধান এখন ৪০ মিটার। এই ধ্বংসাবশেষ ড্রিল করতে পারলেই শ্রমিকদের বের করে আনা সম্ভব হবে।
উদ্ধার কাজ তদারকি সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানালেন, আমেরিকার খননযন্ত্র অগারের মাধ্যমেই শ্রমিকদের দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব। পরিকল্পনা মোতাবেক কাজের অগ্রগতি হলে দু’দিনে সকলকে বের করে আনা করা সম্ভব হবে। আর যদি পরিকল্পনা সফল না হয় তাতে বিলম্বিত হয়ে ১৫ দিন সময় লেগে যেতে পারে।
আটক শ্রমিকদের খিচুড়ির পর মঙ্গলবার রাতের খাবারে দেওয়া হয়েছে পোলাও, মটর পনির এবং দু’টি করে রুটি। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই খাবারের ধরনে বদল আনা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে পাইপের ভিতর দিয়ে প্রায় দেড়শোটি খাবারের প্যাকেট পাঠানো হয়েছে তাদের কাছে। চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানেই তাদের জন্য রান্না হয়েছে। হজম করতে অসুবিধা হবে না এমন খাবার দেয়া হয়েছে।
আটকে থাকা শ্রমিকদের প্রথম ছবি সামনে আসে মঙ্গলবার। মাথায় সেফটি হ্যাট, পরনে অতি সাধারণ পোশাক। তাঁদের সুস্থ-স্বাভাবিক দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন উদ্ধারকারি দল।
৬ ইঞ্চির একটি পাইপে ওয়াকি-টকি পাঠিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথাও বলেছেন উদ্ধারকারী দল। আশ্বাস দেন যে শীঘ্রই তাদের এই অন্ধকার সুড়ঙ্গ থেকে বের করে আনা হবে। উদ্ধারকাজ যতই এগোচ্ছে ততই পরিবারের মধ্যে ক্ষীণ হলেও আশা জন্মাচ্ছে। আটকে থাকা শ্রমিকদের মনোবল চাঙ্গা রাখার জন্য তাদের নিকটাত্মীয়দের ঘটনাস্থলে আনা হয়েছে। নিকটবর্তী হোটেলে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কথা বলেছেন তাদের সঙ্গে।
মনোবিদ অভিষেক শর্মাকে সুড়ঙ্গের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি শ্রমিকদের শারীরিক ভাবে চাঙ্গা থাকার জন্য বিভিন্ন রকম উপদেশ দিয়েছেন। সারা দিনে অন্তত ২ কিলোমিটার পথ হাঁটাহাটি করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, শ্রমিকদের নিয়ম করে যোগাসন অভ্যাস করার কথাও বলেছেন তিনি। নিজেদের ব্যস্ত রাখার জন্য একে অপরের সঙ্গে বেশি করে কথা বলার উপদেশ দিয়েছেন মনোবিদ।
অভিষেক বলেন, ‘‘শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম ভীষণ ভাবে জরুরি, এখনও পর্যন্ত সুড়ঙ্গে তাঁদের ঘুমের কোনও অসুবিধার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ঘুমের সঙ্গে শ্রমিকরা যেন কোনও ভাবেই আপস না করে তা বার বার করে বোঝানো হয়েছে।’’ শ্রমিকদের যেন মানসিক অবসাদ গ্রাস না করে সে কারণে মনোবিদের পরামর্শ মেনে সুড়ঙ্গের ভিতরে পাঠানো হচ্ছে অ্যান্টি ডিপ্রেস্যান্ট ওষুধও।
১২ নভেম্বর ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ ধসে পড়ে। সেই দিন থেকেই সাড়ে আট মিটার উঁচু এবং প্রায় দু’কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন প্রায় ৪১ জন শ্রমিক।