বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ: মঙ্গলবার জেলার সুরমা, যাদুকাটা, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ ফসলী জমি। ঢলের পানিতে সদর ও দেয়ারাবাজার উপজেলার অনেক পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন মাছ চাষীরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বন্যার কারণে পানি উঠায় জেলার ছাতক-সুনামগঞ্জ-সিলট, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ-হালুয়াঘাট-মঙ্গলকাটা সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সিলেট সুনামগঞ্জ সড়কের গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় পানি উঠায় যান চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ শহরের সাহেববাড়ী, মধ্যবাজার, জেলরোড, লঞ্চঘাট, উকিলপাড়া, নবীনগর, বড়পাড়াসহ একাধিক পয়েন্ট পানি প্রবেশ করেছে। অপর দিকে বন্যার পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন সুরমা নদী তীরবর্তী সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভপুর, তাহিরপুর,দোয়ারাবাজার, ছাতক, ধর্মপাশাসহ অন্ত ১০ ইউনিয়নের ২০ হাজার মানুষ।
আগামী ৪৮ ঘন্টা, ভারতের আসাম, মেঘালয় ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা থাকায় সুনামগঞ্জ -সিলেট অঞ্চলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে মাঝারি ধরনের বন্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বন্যার্তদের সহযোগিতায় জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলায় ১০ টন চাল ও নগদ দুই লাখ টাকা, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ৭ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বন্যা কবলিত উপজেলায় চাল বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন।
বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রের জন্য বন্যার্ত এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ফ্লাড সেন্টারগুলো খোলা রাখার কথা জানিয়েছেন তিনি।
ঢলের পানিতে তাহিরপুর , বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার ও সদর উপজেলার উচ্চ এলাকার ৭০০ হেক্টর বোরো জমি এবং ৭০ হেক্টর চিনা বাদাম তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভিাগের উপ- পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম।
সদর উপজেলার সুরমা ভৈষারপার গ্রামের মুজিবুর রহমান বলেন, অনেক ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। আমাদের গ্রামের রাস্তায় পানি, স্কুলে পানি, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। কাংলার হাওর, রাঙ্গাউরি, ধরাবিলসহ কয়েকটি হাওরের স্কীমে চাষ করা জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
আমীর হোসেন নামে আরেক কৃষক বলেন, পানিতে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাচ্ছে। তিন বিঘা জমি চাষ করেছিলাম এক মুঠো ধানও কাটতে পারিনি। হঠাৎ পানি এসে আমার সব নিয়ে গেছে। উজানে ভারতে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে সুনামগঞ্জের সুরমাসহ সকল নদনদীর পানি বিপদসীমা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘন্টা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌলী মো. সামছুদ্দোহা।