শ্যামনগর: বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ১৪ ফেব্রুয়ারিকে সুন্দরবন দিবস হিসাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে শ্যামনগরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সুন্দরবন প্রেসক্লাবের সামনে শরুব ইয়ুথ টিম উক্ত মানববন্ধনের আয়োজন করে। দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স, সাউদার্ন চ্যারিটি ফাউন্ডেশন ও সুন্দরবন প্রেসক্লাব।
মানববন্ধনে উপকূলীয় অঞ্চলের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দও অংশ নেন।
মানববন্ধনে শরুব ইয়ুথ টিমের সভাপতি জান্নাতুল নাঈমের সভাপতিত্বে ও মমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক সাইদুজ্জামান সাঈদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, সাংবাদিক ও শিক্ষক রনজিত বর্মন, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাগর কুমার মন্ডল, শরুব ইয়ুথ টিমের সাধারণ সম্পাদক বাদশা ওয়ালিদ, লিডার্সের এ্যাডভোকেসি অফিসার পরিতোষ কুমার বৈদ্য, সাউদার্ন চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের শাহিন সিরাজ, সুন্দরবন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিলাল হোসেন প্রমূখ।
মানববন্ধনে সুন্দরবন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিলাল হোসেন বলেন, পরিবেশগত দিক দিয়ে উপকূলের মানুষ পুরোপুরি সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল। সুন্দরবনের সাথে রয়েছে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক, নিবিড় ঘনিষ্ঠতা। সকল প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের মায়ের মতো আগলে রাখে। এজন্যই সুন্দরবনকে আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন মনে করি। সুন্দরবনের সুরক্ষায় সুন্দরবন দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রয়োজন।
শরুব ইয়ুথ টিমের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জান্নাতুল নাঈম বলেন, আমরা সুন্দরবনের অনেক ক্ষতি করলেও সুন্দরবন সব সময় শুধুই দিয়েই গেছে। যারা বুঝে বা না বুঝে সুন্দরবনের ক্ষতিসাধন করে আসছে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। যে কোন মূল্যে নিজেদের স্বার্থে সুন্দরবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
লিডার্সের পরিতোষ কুমার বৈদ্য বলেন, সুন্দরবনের সুরক্ষায় এর উপর মানুষের যে অনাচার চলছে, তা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। একই সাথে বেআইনীভাবে বৃক্ষ নিধন, বন্যপ্রাণী হত্যা, নিরবচ্ছিন্ন মৎস্যসম্পদ আহরণ বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবন বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে আমাদের মায়ের মত রক্ষা করে। তাই সুন্দরবন রক্ষায় সরকারকে বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে।
রনজিত বর্মন বলেন, সুন্দরবন মায়ের মতন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে। এই সুন্দরবনকে যদি আমরা রক্ষা করতে না পারি তাহলে আমাদের উপকূলের সমস্যা আরও বাড়বে।
প্রধান অতিথি বলেন, সুন্দরবন শুধুমাত্র পৃথিবীর একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনই নয়, বিশ্বে সুন্দরবনের মত এত সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য আর কোন বনে নেই। এজন্যই সুন্দরবনকে বলা হয় ‘জীববৈচিত্র্যের জীবন্ত পাঠশালা’। আমাদের নিজেদের বেঁচে থাকার স্বার্থেই সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সুন্দরবন বেঁচে থাকলে সুন্দরবনও আমাদের বাঁচিয়ে রাখবে।
এসময় বক্তারা ১৪ ফেব্রুয়ারিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস হিসেবে ঘোষণার জোর দাবী জানান।
-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি