বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আমরা সকলেই চাই, আমাদের ভাল দেখাক। শরীর-স্বাস্থ্যের শ্রীবৃদ্ধি হোক। খারাপ দেখাতে বা বুড়িয়ে যেতে আমরা কেউ চাই না। তাই আজীবন আমরা অনেকেই অজস্র প্রসাধনীর পিছনে ব্যয় করি।
কিন্তু সত্যিটা হল, সুষম খাবার খেলে, ভেতর থেকে সুস্থ থাকলে, তার প্রতিচ্ছবি আমাদের চেহারাতেও পড়ে। শুধু প্রসাধনীর সাহায্যে ঝলমলে ত্বক বা চেহারা পাওয়া পুরোপুরি সম্ভব নয়। কোন কোন খাবারে ভাল থাকে ত্বক? খাবার তালিকায় কী কী থাকলে আমাদের চেহারা আরও প্রাণোজ্বল হয়, জেনে নিন।
সামুদ্রিক মাছ
অনেকেই সামুদ্রিক মাছের গন্ধে নাক সিঁটকোন। তবে ভুলে গেলে চলবে না, বেশিরভাগ সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ভরপুর ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই ফ্যাট আমাদের ত্বক ও শরীরের যে কোনও ধরনের ইনফ্ল্যামেশন বা প্রদাহ প্রতিরোধ করে। তা ছাড়া ত্বকের কোলাজেন রক্ষার্থেও এই ওমেগা-৩র ব্যাপক ভুমিকা রয়েছে। তাই ত্বকের ভালর জন্য সামুদ্রিক মাছ দুর্দান্ত।
ফ্ল্যাক্স সিড বা তিসি
স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ মাত্রই এখন ফ্ল্যাক্স সিডের সঙ্গে পরিচিত। বাংলায় এর নাম তিসির বীজ। যা থেকে কিনা তৈরি হয় তিসির তেল। আমাদের ত্বকের কোলাজেনকে আরও বেশি বুস্ট করে এই তিসি। তিসির তেল দিয়ে রান্না করা যেতে পারে। অথবা অন্য কোনও রান্নাতেও তিসি বীজ বা তেল মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। ত্বকের জন্য তিসি দারুন উপকারী।
চিয়া সিড
এক দশক আগেও বাঙালিরা চিয়া সিডের সঙ্গে তেমন পরিচিত ছিল না। তবে প্রযুক্তির কল্যাণে দুনিয়া হাতের মুঠোয় আসার সঙ্গে সঙ্গে বাঙালিরা আপন করেছে চিয়া সিডকে। এই চিয়া বীজ স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ ভাল। যাঁরা ডায়েট করেন বা সুন্দর চেহারার জন্য খাবারের তালিকা প্রস্তুত করেন, তাঁদের তালিকায় চিয়া সিড থাকেই। চিয়া সিড স্যালাড, দই বা অন্য কোনও দানাশস্যের সঙ্গে সহজেই মিশিয়ে খাওয়া যায়।
আখরোট
ড্রাই ফ্রুটসের মধ্যে আখরোটের কদর গোটা বিশ্বজুড়েই রয়েছে। কারণ এই ফলটির স্বাস্থ্য উপকারিতা অজস্র। আমাদের ত্বকের জন্যও ভীষণ ভাল আখরোট ও আখরোটের তেল।
সয়াবিন তেল
আগেকার দিনের মতো সমস্ত রান্নাবান্না এখন আর সর্ষের তেলে হয় না। স্বাস্থ্যের কারণেই এখন অনেকের প্রথম পছন্দ সাদা তেল। আর এই সাদা তেলের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় সয়াবিন অয়েল। সয়াবিনের বীজ থেকে নিঃসৃত এই তেলে তৈরি খাবার খেলে তার উপকার অনেক। ভাল থাকে ত্বকও।
টমেটো
আক্ষরিক অর্থে টমেটো ফল হলেও আমাদের দেশে একে সবজি হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। এত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপিন, যা কিনা এক প্রকারের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ও ফ্রী ব়্যাডিক্যালের হাত থেকে আমাদের বাঁচাতে সাহায্য করে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এর উপস্থিতি আমাদের ত্বককে নরম ও মসৃণ করে। রান্নায় তো টমেটো ব্যবহার করাই যায়। সঙ্গে স্যালাড বা সসেও টমেটো খাওয়া যায়।
লেবুজাতীয় ফল
টক ফল বা লেবুজাতীয় ফলে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই। ত্বকের কুঁচকে যাওয়া প্রতিহত করে ত্বকের বয়স বাড়তে দেয় না এই দুই ভিটামিন। কমলা, মুসাম্বি, পাতি লেবু, আঙুরে ভরপুর ভিটামিন থাকে।
ক্যাপসিকাম ও বেলপেপারস
লাল, হলুদ, সবুজ, কমলা– সব রঙের ক্যাপসিকামই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা ত্বক টানটান রাখে, বয়সের ছোপ পড়তে দেয় না।
স্ট্রবেরি ও কিউয়ি
বিদেশি ফল হলেও এ দেশে এখন বেশ সহজলভ্য এ দুটি ফল। ফ্রুট স্যালাড বা স্মুদিতে ভিটামিন সি ভরপুর ফল দুটি রাখতেই পারেন। ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতে দারুণ কার্যকর।
আমন্ড
ভিটামিন ই ঠাসা এই ড্রাই ফ্রুটটিতে। প্রতিদিন এক মুঠো আমন্ড রাখুন আপনার খাবারে। আমন্ড অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন।
ডার্ক চকোলেট
চকোলেট খেতে কে না ভালবাসেন! তবে খেলে ডার্ক চকোলেট খাওয়াই ভাল। এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। সূর্যের প্রখর রশ্মি ও দূষণ থেকে ত্বককে বাঁচাতে পারে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। তবে ভাল বলেই পরিমাণে বেশি চকোলেট খেলে চলবে না। রোজ এক-দু’টুকরোর বেশি নয় কিন্তু।