- বন্দর কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে পত্র
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: দেশজুড়ে চলমান সাধারণ ছুটিতে বহির্নোঙরে বড় বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে নিয়োজিত স্টিভিডোরিং শ্রমিকদের দ্বিগুণ হারে মজুরি পরিশোধ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন শিপহ্যান্ডলিং অপারেটররা। কতিপয় আমদানিকারক ও শিপিং এজেন্ট বাড়তি ব্যয় পরিশোধে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাধারণ ছুটির সময় স্টিভিডোরিং শ্রমিক-কর্মচারিদের মজুরি দ্বিগুণ। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এ সময়ের মধ্যে কাজের জন্য দ্বিগুণ হারে মজুরি প্রদান করছেন।
পণ্য খালাসের জন্য শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরদের নিয়োজিত করেন শিপিং এজেন্ট ও আমদানিকারকরা। কাজ চলার সময়ে মোট বিলের ৫০ শতাংশ এবং শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ বিল পরিশোধ করতে হয়। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের।
বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটরস এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এ কে এম শামসুজ্জামান (রাসেল) –এর সাথে যোগাযোগ করা হলে এ প্রসঙ্গে বলেনে, ‘কতিপয় শিল্পগোষ্ঠির কাছে আমরা জিম্মি হয়ে গেছি। তাদের অসহযোগিতার কারণে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন শিপহ্যান্ডলিং অপারেটররা। বর্তমান সাধারণ ছুটিতে দ্বিগুণ হারে মজুরি দিয়ে বহির্নোঙরে এবং বিশেষায়িত জেটিতে পণ্য খালাস ব্যবস্থা তথা বন্দরকে সচল রেখেছি।’
বেশ কয়েক মাস ধরে কতিপয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান নিয়মিত বিল পরিশোধ না করে দুর্দশায় ফেলেছে। সাম্প্রতিককালে তাদের আচরণ আমাদেরকে আরও ক্ষুব্ধ করেছে। শ্রমিক কর্মচারিদের হলিডে রেটে মজুরি পরিশোধের কারণে যে অতিরিক্ত বিল সেটা গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। দফায় দফায় ফোন করেও তাদের কোন সাড়া মিলছে না বলে জানান তিনি।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চেয়ে পত্র দিয়েছে শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটরস এসোসিয়েশন। কোন কোন আমদানিকারকের আচরণে শ্রমশান্তি বিঘ্নিত হওয়ার ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় পত্রে। বন্দর সূত্র পত্রটি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায়।
চাল, গম, ভুট্টা, ডাল, চিনি, সার, সিমেন্ট ক্লিংকার, স্টিল কারখানার কাঁচামাল ইত্যাদি নিয়ে বড় বড় যেসব জাহাজ বিদেশ থেকে আসে তার সবগুলো জেটি পর্যন্ত আসতে পারে না সরাসরি। এসব পণ্যের প্রায় ৭৫ ভাগ বহির্নোঙরে খালাস করা হয়। কোন কোন জাহাজ সব পণ্য বহির্নোঙরে খালাস করে ফিরে যায়। আর কিছু জাহাজ আংশিক পণ্য সেখানে নামিয়ে দিয়ে চলে আসে জেটিতে। কারণ এসব বৃহৎ জাহাজের সমূদয় মালামাল নিয়ে জেটিতে আসার সুযোগ নেই। তলা আটকে যেতে পারে। তাই বন্দর কর্তৃপক্ষ সব তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কত আয়তনের আর কত গভীরতা নিয়ে জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারবে সেটা। বহির্নোঙরে অবস্থান করে এসব মাদার ভেসেল। সেখানে পণ্য খালাস কার্যক্রম পরিচালনা করেন শিপহ্যান্ডলিং অপারেটররা। এর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিক কর্মচারি এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ করেন অপারেটররা। এছাড়াও সরবরাহ করতে হয় রান্নার সরঞ্জাম হাঁড়ি-পাতিল, চুলা, সুতলি, বস্তা, সুঁই, সুতা, স্টিচিং মেশিন, ওয়্যার, সিলিং, তেরপল, তাঁবু, তেল, কেরোসিন, নাট-বল্টু পর্যন্ত। কেবলামাত্র একটি সুঁই বা নাটবল্টুর জন্যও কাজ ব্যাহত হয়।