বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
‘যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব’— এই মন্ত্রকেই আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন ইউক্রেনের আলেকজান্ডার কুডলে এবং ভিক্টোরিয়া পুস্তোভিটোভা। দাম্পত্য জীবন ডানা মেলেনি। কিন্তু তার আগে প্রেমজীবনেই যে হাজারো অশান্তি, খিটিমিটি লেগে রয়েছে! বাজার করা থেকে শুরু করে ঘুমোনোর সময়— কোত্থাও তালমিল নেই।
তাই যৌথ জীবনে শান্তি ফেরাতে অদ্ভুত উপায় বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা। একে অন্যের হাতে পরিয়ে দিয়েছিলেন বাঁধন। প্রেমের নয়… চেনের। হ্যাঁ, হাতকড়া পরিয়েই একে অন্যের পিছুপিছু ঘুরেছেন… একদিন, দু’দিন নয়… পাক্কা ১২৩ দিন। বাথরুম যাওয়া থেকে শুরু করে ভ্যাকসিনেশন— কোভিডের উথাল-পাথাল সময়েও একে অন্যের ‘হাত’ আক্ষরিক অর্থেই ছাড়েননি কেউই। ‘আউট অব সাইট, আউট অব মাইন্ড’ প্রবাদের নিহিত অর্থটুকু মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছিলেন দু’জনেই।
কিন্তু জীবনের অঙ্ক যে বড্ড গোলমেলে। এখানে কোনও প্রবচনের নিদান খাটে না। তাই ১২৩ পর ‘হাতকড়ামুক্ত’ হয়ে সম্পর্ক থেকেও মুক্তি চেয়েছেন তাঁরা। কিয়েভের রাজপথে রীতিমতো ঘটা করে সাংবাদিক ডেকে চেন কাটার আয়োজন হয়। ব্রেক আপের পর তার ছবি জয়েন্ট ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্টও করেছেন ওই যুগল। যা ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে!
বছর তেত্রিশের আলেকজান্ডার পেশায় অনলাইন গাড়ি বিক্রেতা। অন্যদিকে উনত্রিশ বছর বয়সী ভিক্টোরিয়া বিউটিশিয়ানের কাজ করেন। চলতি বছর ভ্যালেন্টাইন্স ডে ‘উদযাপন’ করতে ইউক্রেনের খারকিভের যুগল একে অপরকে হাতকড়া পরানোর সিদ্ধান্ত নেন। কথায় কথায় ব্রেক আপ আর রোজকার ঝামেলাঝাটিতে তিতিবিরক্ত হয়েই এমন ‘এক্সপেরিমেন্ট’। জানিয়েছিলেন আলেকজান্ডার।
কিন্তু গোড়াতেই নয়া পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ে। একে অন্যের ব্যক্তিগত জীবনে আরও বেশি করে নাক গলানো শুরু হয়। আলেকজান্ডারের কথামতো কাজ করতে রাজি ছিলেন না ভিক্টোরিয়া। সবমিলিয়ে পুরোনো জীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য তিনি অনবরত ঘ্যানঘ্যান করতে থাকেন। যার জের এই হাতকড়ামুক্তি।
কিয়েভের রোদেলা রাজপথে দশাসই চেন কাটার দিয়ে ‘আলাদা’ হওয়ার পর স্বাধীনতার স্বাদ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ভিক্টোরিয়া। ‘ইয়াহু’ বলে সোল্লাসে আনন্দ প্রকাশের পর তিনি বলেন, ‘সবাইকে অনেক ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য৷ আমরা খুশি। আর এই অভিজ্ঞতা দুজনেই খুব উপভোগ করেছি। এখন থেকে আমরা আলাদা, স্বাধীনভাবে বাঁচব।’