Home অন্যান্য হাত জীবাণুমুক্ত করে ঘুষ নেওয়া ওসি স্ট্যান্ড রিলিজ!

হাত জীবাণুমুক্ত করে ঘুষ নেওয়া ওসি স্ট্যান্ড রিলিজ!

মাহফুজ আলম

ফরহাদ আলম সুমন

লালমনিরহাট:  সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ আলমের ঘুষ গ্রহণের সাত মিনিটের একটি ভিডিও ফাঁস হয়েছে। ভিডিওটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। তিনি এই ঘুষ গ্রহণ করেছেন একটি মারামারি মামলার আসামিপক্ষের লোকজনের কাছ থেকে।

মামলার আসামিকে তিনি গ্রেপ্তার না করে আসামিপক্ষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ওই মামলার বাদীকেই হয়রানি করতে ঘুষ গ্রহণ করতে দেখা যায় ওই ভিডিওতে। এ ঘটনায় ওসিকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে ঢাকার টু¨রিষ্ট পুলিশে বদলি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, লালমনিরহাট সদর থানায় তার নিজের কক্ষে বসে আছেন ওসি। আর দর্শনার্থীদের চেয়ারে বসে থাকা দু’জনের কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে অডিওতে। টেবিলের ওপর থাকা কাগজপত্র দেখছেন আর মাঝে মাঝে ভিডিও’র অপরপ্রান্তে থাকা দুজনের সঙ্গে কথা বলছেন। ওসি মাহফুজ আলম তাঁর অফিসকক্ষে মারামারির মামলায় প্রধান অভিযুক্তকে বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে কখন কী মামলা করতে হবে, কীভাবে শায়েস্তা করতে হবে, সে বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে টাকা দিতে বলছেন। টাকা পয়সা লেনদেন সংক্রান্ত প্রেক্ষাপটে ওসি হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে নিজের এবং ঘুষদাতার হাত স্যানিটাইজ করে নিতে দেখা যায়।

ভিডিওতে ওসিকে বলতে শোনা যায়, ‘মামলায় তোমরা যাকে বাদি করতে চাচ্ছ সেতো এখনো কারাগারে আছে। তার জামিন হওয়ার আগেই তাকে বাদি বানিয়ে মামলা নেওয়া হলে বেআইনি হবে। জামিনের কাগজপত্রসহ তোমরা আসলে তখন মামলাটি নথিভূক্ত করা হবে। এর আগে কোনো ঝামেলা হলো তোমরাই প্যাঁচে পরতে পারো।

ওসির ওই কথার পর ঘুষ দাতাদের একজন বলেন, ‘আমরা কোনো ঝামেলা করি নাই, করবও না। প্রয়োজন হলে ওই দিকে যাবে না কেউ’।

মাহফুজ আলম ওই দুজনের উদ্দেশ্যে আরও পরামর্শ দেন, ‘মামলা এখানে (থানায়) একটা করে দেব। কোর্টেও একটা মামলা এবং চেক ডিজঅনার করবে। তখন সে চড়কির মতো ঘুরবে। যারা বুদ্ধিদাতা তারা হেরে যাবে’।

এদিকে ভিডিওটি সাসাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর বৃহস্পতিবার ওসি মাহফুজ আলমকে ষ্ট্যান্ড রিলিজ করে ঢাকায় টু¨রিষ্ট পুলিশে বদলী করা হয়েছে বলে পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে লালমনিরহাট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কেউ মুখ খোলেননি।

ওসি মাহফুজ আলম বলেন, মামলার বিষয় নিয়ে অনেকেই পরামর্শ করতে আসেন। ঈদের আগেও এসেছেন।

ভিডিওতে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো সব ষড়যন্ত্র। এর বাইরে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।

লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, এ ঘটনায় লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।