Home স্বাস্থ্য হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি মেয়েদের বেশি কেন?

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি মেয়েদের বেশি কেন?

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

হার্টের যে অংশে অক্সিজেন ঠিক মতো পৌঁছচ্ছে না সেই অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েই অ্যাটাক হয়। সাধারণত করোনারি আর্টারি, রক্তনালিতে ফ্যাট জমেই হার্টে ব্লকেজ হয়। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রাণ হারান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। অত্যধিক মানসিক চাপ, কর্মব্যস্ত জীবন— অনেক ক্ষেত্রেই দৈনন্দিন যাপনের মধ্যেই নিহিত থাকে হৃদরোগের কারণ। অনেক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।

মেয়েদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি কেন?

৪৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে মহিলাদের মেনোপজ হয়। এর পর শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। এ কারণে তাঁদের হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।

বাড়ির পুরুষ এবং মহিলা দু’জনেই পেশাগত ক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকলেও দেখা যায় যে বাড়ির মহিলাদেরই বাড়ির কাজ এবং কেরিয়ার এক সঙ্গে সামলাতে হচ্ছে। যে কারণে তাঁর ক্লান্তির পরিমাণ, শরীরে এবং মনের উপর ধকল অত্যন্ত বেশি। অনুমান করা হচ্ছে, যে এই বাড়তি চাপই হার্টের রোগের কারণ। শেষ পাঁচ বছরের সমীক্ষা বলছে কমবয়সিরাই হার্টের রোগের বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এর কারণ হল অসংযত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যায় ও অতিরিক্ত মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি এবং অবসাদ।

মেয়েদের হার্টের রোগ এত বেশি হওয়ার আরও একটা কারণ হল মেদাধিক্য বা ওবেসিটি, যা হার্টের অসুখের অন্যতম রিস্ক ফ্যাক্টর। আর এদিকে ভারতীয় মহিলাদের সিংহভাগই ঝুঁকে মেদাধিক্যের দিকে।

বিগত কয়েক দশক ধরে অনিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিকের সমস্যা বহুগুণে বেড়েছে মহিলাদের মধ্যে। দেখা যাচ্ছে, প্রচুর মহিলাদের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই মেনোপজ হয়ে যাচ্ছে। এ দিকে মেনোপজ হলে ইস্ট্রোজেন হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়, যা পরোক্ষভাবে হৃদয়ের ওপর কুপ্রভাব ফেলে।

ধূমপানের অভ্যাস বাড়িয়ে দেয় হৃদরোগের আশঙ্কা। ধূমপান বন্ধ করে দিলে হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা কমে শতকরা আশি ভাগ। অতিরিক্ত মদ্যপান থেকেও নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। এতেও হৃদরোগের আশঙ্কা বাড়ে।

কোন লক্ষণগুলো সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন বাবা-মায়েরা পুরুষদের থেকে উপসর্গ কিছুটা আলাদা পুরুষ আর মহিলাদের মধ্যে হৃদ্‌রোগের উপসর্গগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আলাদা হয়।

বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মেয়েদের ক্ষেত্রে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে বুকে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যায় না। এ ক্ষেত্রে মূলত ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, কাঁধ ও ঘাড়ে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। হঠাৎ কি আপনার একটু বেশিই ক্লান্তি লাগছে? ক্লান্তির সঙ্গে যদি বুকে ভারী ভাব অনুভব হতে থাকে তা হলে তা হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। বিশ্রাম নেওয়ার সময় বা এক জায়গায় বসে থাকার সময়েও যদি শ্বাস নিতে সমস্যা হয় এবং ঘাম হতে থাকে, তাহলে দেরি করা ঠিক হবে না। ঠান্ডা না লাগলেও প্রচণ্ড কাশি, কফের সঙ্গে রক্ত বের হলে সাবধান হতে হবে। যখনই প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হয়, আমরা ওষুধ খেয়ে থাকি। জেনে রাখুন, হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ হল প্রতিদিনের প্রচণ্ড মাথা ব্যথা। আগে থেকেই শরীর জানান দেয়।

যদি কাজ করার মধ্যেই আপনি প্রায়ই হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যান, তা হলে বুঝবেন হার্টের সমস্যা রয়েছে। যদি মাঝেমধ্যেই পালস রেট ওঠা-নামা করে তাহলে সতর্ক হতে হবে।