Home চেম্বার ১২ বছরে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সাফল্য: সালমান রহমান

১২ বছরে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সাফল্য: সালমান রহমান

সালমান এফ রহমান

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

ঢাকা: ব্যবসায়ীরা সব সময় সরকারের কাছে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা চায়। সেটা তারা চাইতেই পারে। কিন্তু সুযোগ-সুবিধা পেতে হলে একই সঙ্গে তাদের দায়িত্বও নিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

বুধবার বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি) আয়োজিত ‘কভিড-১৯ অতিমারী : বাংলাদেশে বিনিয়োগের ওপর প্রভাব ও অগ্রসরতা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কশিমনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম এবং দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম। ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইস্ট কোস্ট গ্রুপের পরিচালক তানজিম চৌধুরী। সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বিএপিএলসির ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়াদ মাহমুদ। সভাপতিত্ব করেন বিএপিএলসির প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবীর বক্তব্য দেন।

ওয়েবিনারে সালমান এফ রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে আমরা গত ১২ বছরে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করেছি। এতে আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। এ কারণেই কিন্তু আমরা কভিড-১৯ অতিমারীর এই সংকট মোকাবিলা করতে পারছি। সমস্যা থাকবেই। কিন্তু শুধু এই সমস্যা, সেই সমস্যা বলে বসে থাকলে হবে না। ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে সমস্যার বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের কাছে তুলে ধরতে হবে, যাতে তারা সেগুলো সমাধান করার উদ্যোগ নিতে পারে। দুই দিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি তথ্যপ্রযক্তির সহায়তায় করজালের আওতা বাড়াতে বলেছেন। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর চ্যালেঞ্জের কথা উঠে এসেছে। চ্যালেঞ্জকে কীভাবে সুযোগে পরিণত করা যায় সে বিষয়ে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে চিন্তাভাবনা করতে হবে। আমাদের আগে থেকেই যত বেশি দেশের সঙ্গে সম্ভব মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে হবে। যাতে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলে আমরা যেসব সুযোগ-সুবিধা পাব না সেগুলো পুষিয়ে নেওয়া যায়। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশকে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে পরিণত করতে হবে। আমাদেরকে শুল্কের ওপর নির্ভর না করে আয়কর ও মূসকের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, কভিডের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে আমরা সবাই অবগত রয়েছি। কিন্তু এর বেশ কিছু সুবিধাও রয়েছে। ডিজিটাল মাধ্যমে এ সময় অনেকের সঙ্গে মিটিং করেছি যেটা হয়তো স্বাভাবিক সময়েও সম্ভব ছিল না। আমাদের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে হলে বৈচিত্র্য বাড়াতে হবে। বিশেষ করে তৈরি পোশাকের বাইরে সম্ভাবনাময় যেসব খাত রয়েছে সেগুলোর দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা এজন্য কাজ করছি। সব সংস্থা ও মন্ত্রণালয় যদি একটি টিম হয়ে কাজ করতে পারে তাহলে আমাদের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।

এসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, কভিড-১৯-এর কারণে আমরা কঠিন সময় পার করছি। তবে এটি শেষ হওয়ার নয়। হয়তো সামনে নতুন কভিড আসবে। এজন্য আমাদেরকে এটি মোকাবিলা করেই টিকে থাকতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার আয়ত্ত করতে হবে। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরের ফলে যেসব চ্যালেঞ্জ আসবে সেগুলো মোকাবিলা করতে হবে। কোনোভাবেই আমাদের ঋণের ফাঁদে পড়া চলবে না। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা, সেটির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করতে হবে।

এসইসি চেয়ারম্যান বলেন, পরিকল্পিতভাবে আধুনিক ও উন্নয়নমুখী পুঁজিবাজার গঠন করা হচ্ছে। বড় বড় প্রকল্পের উদ্যোক্তারা যাতে এখান থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বন্ড মার্কেট চালু ও ডেরিভেটিভ প্রোডাক্ট চালুর প্রক্রিয়া চলছে। পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিয়োগকারীদের অভাব রয়েছে। এটি দ্রুত পূরণ করার কাজ চলছে।

এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, কভিড-১৯-এর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সব খাতে দুই বছর আগাম উৎসে কর না  নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। করপোরেট করের হারও কমাতে হবে। কভিডের পর থেকে ব্যবসায়ীদের জন্য এফবিসিসিআই নীতিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের জন্য খাতওয়ারি স্কিম সুবিধার জন্য কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

এমসিসিআই প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর উত্তরাধিকার সূত্রে যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলোর সমাধানের বিষয়ে জোর দেন। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে আমাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের গতি বেশ ভালো। ঐতিহ্যগতভাবেই আমাদের ভালো সহনশীলতা রয়েছে। অন্যদের চেয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে থাকব বলে আশা করছি।