Home First Lead ৩৬ ঘণ্টায় ডিপো থেকে শিপমেন্ট হচ্ছে: বিকডা সভাপতি

৩৬ ঘণ্টায় ডিপো থেকে শিপমেন্ট হচ্ছে: বিকডা সভাপতি

আইসিডিতে পর্যাপ্ত স্থান, ইকুইপমেন্ট ও শ্রমিক স্বল্পতা থাকলে দেড় দশক ধরে ক্রমবর্ধমান রপ্তানি পণ্য কিভাবে হ্যান্ডলিং করছে?

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: বেসরকারি অফডকসমূহ থেকে পণ্য খালাসে বিলম্ব এবং অধিকতর খরচ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো এসোসিয়েশন ( বিকডা ) সভাপতি নুরুল কাইয়ুম খান বলেছেন যে ডিপোতে পৌঁছার ২৪ ঘণ্টা থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে রপ্তানি পণ্য শিপমেন্ট হচ্ছে। আর আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার বন্দরে ফেলে রাখা বা বন্দর হতে এনে নিজেদের ইয়ার্ডসমূহে মজুত রাখার মধ্যে কোন ব্যবসায়ীক লাভ নেই।

তিনি বলেন, সততা ও নিষ্ঠার সাথে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আইসিডিসমূহ। হাজার হাজার গ্রাহককে সেবা দিতে গিয়ে কিছু ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটতে পারে। এই ব্যতিক্রম কখনও উদাহরণ হতে পারে না।

বেসরকারি কন্টেইনার ডিপো থেকে আমদানি পণ্য পেতে অস্বাভাবিক সময়ক্ষেপণ হচ্ছে, রপ্তানিতেও বিলম্ব হচ্ছে এবং বন্দরের তুলনায় ব্যয় প্রচুর বলে অভিযোগ চিটাগাং চেম্বার এবং রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র। এর প্রেক্ষিতে কাস্টমস কমিশনারকে সোমবার দেয়া এক পত্রে বিকডা সভাপতি নুরুল কাইয়ুম খান উল্লেখ করেন যে বর্তমানে ১৯টি বেসরকারি আইসিডি প্রায় ১০০ ভাগ রপ্তানি এবং ২৩ ভাগ আমদানি পণ্য হ্যান্ডলিং করছে। রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের সবটাই বেসরকারি আইসিডিসমূহের মাধ্যমে রিসিভিং, ওয়ারহাউজিং, কনসলিডেশন, স্টাফিং, শুল্ক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শুল্কায়ন, সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পন্ন করে কন্টেইনার ভর্তি হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বেসরকারি আইসিডিসমূহ ৬,৫৫,৪৬১টিইইউ রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে  নির্দিষ্ট জাহাজসমূহে শিপমেন্ট করেছে।

পত্রে বলা হয়: বেসরকারি আইসিডিসমূহে পণ্যের গড় অবস্থান হলো ২.৭ দিন। তা বিশ্বব্যাংকের টাইম রিলিজ স্টাডির তথ্য। রপ্তানি পণ্য হ্যান্ডলিং একটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ অপারেশনাল কার্যক্রম, তবু আইসিডিসমূহ কোন কোন ক্ষেত্রে ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে রপ্তানি পণ্য রিসিভিং, কনসলিডেশন, শুল্কায়ন, স্টাফিং ইত্যাদি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শিপমেন্ট করে। গত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আইসিডিসমূহ দেশের রপ্তানিখাতকে এই বিশেষায়িত এবং অতীব জরুরি সেবা প্রদান করে আসছে।

বিকডা সভাপতি পত্রে উল্লেখ করেন, ২০১০ সালে আইসিডিসমূহ মোট রপ্তানি পণ্য শিপমেন্ট করেছিল ৩,৩৫,৬৩২ টিইইউ। ১০ বছরে তা দ্বিগুণ হয়েছে। এসময়ে কেবল একটি নতুন আইসিডি হয়েছে। অর্থাৎ ১০ বছরে আইসিডিসমূহ তাদের সব ধরনের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার কারণেই দেশের রপ্তানি পণ্য সুষ্ঠুভাবে হ্যান্ডলিং হয়ে নির্দিষ্ট ফিডার জাহাজে শিপমেন্ট করা সম্ভব হচ্ছে। আইসিডিসমূহ যদি পর্যাপ্ত স্থান, ইকুইপমেন্ট ও শ্রমিক স্বল্পতা থাকতো তাহলে দেড় দশক ধরে আইসিডিসমূহ দেশের ক্রমবর্ধমান রপ্তানি পণ্য কিভাবে হ্যান্ডলিং করছে প্রশ্ন করেন তিনি।

বেসরকারি  আইসিডিসমূহ এনবিআর অনুমোদিত ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্য বন্দর হতে তাদের ইয়ার্ডসমূহে নিয়ে ডেলিভারি দিয়ে থাকে। এসবপণ্যের আওতায় বেসরকারি আইসিডিসমূহ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২,৮৩,৭২৬ টিইউস পণ্যবন্দর থেকে ইয়ার্ডসমূহে স্থানান্তর করেছে। ৬,৫৫,৪৬১ টিউস রপ্তানি পণ্য শিপমেন্ট করেছে। কিন্তু ফিরতি পথে ২,৮৩,৭২৬ টিইউস আমদানি পণ্য বন্দর হতে বের করতে পারছে না এই অভিযোগ খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আমদানি কনসাইনমেন্ট নিয়ে কাজ করতে কতিপয় ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু সেকারণে ব্যতিক্রম কখনও উদাহরণ হতে পারে না।

বিকডা সভাপতি দাবি করেন যে আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার বন্দরে ফেলে রাখা বা বন্দর হতে এনে নিজেদের ইয়ার্ডসমূহে মজুত রাখার মধ্যে কোন ব্যবসায়ীক লাভ নেই। গ্রাউন্ড রেন্ট আদায়ের জন্য এটা করা হয় এমন মনে করেন কেউ কেউ। এটা অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক বাজার। কোন আইসিডি অনৈতিকভাবে কোন চার্জ আদায় করলে আমদানিকারক তার পরবর্তী কনসাইনমেন্ট সেই আইসিডিতে নিযে যাবে না। বর্তমান চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক বাজারে ৫০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে কোন আইসিডিই আমদানিকারককে কোনঠাসা করে ব্যবসা করে না। সততা ও নিষ্ঠার সাথে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে। তবে হাজার হাজার গ্রাহককে সেবা দিতে গিয়ে কিছু ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটতে পারে বলে জানান নুরুল কাইয়ুম খান।