*সাত কোটি মানুষ দেখবে দেশ সত্যিকার স্বাধীন হয়েছে:বঙ্গবন্ধু
* পূর্ণ হরতাল শেষে গোলযোগ হয়
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত একটি জনসভাতেও স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন। সভায় তিনি না থাকলেও যেন বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলন না থেমে থাকে সে জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর টালবাহানা এবং জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিতের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠেছিল পুরো দেশ। ছাত্রলীগ এবং শ্রমিকলীগের উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ পল্টন ময়দানের জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে পাঠ করা হয় স্বাধীনতার ইশতেহার। বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীকার আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করে ছাত্রসমাজ।
বঙ্গবন্ধু ওই সভায় বলেছিলেন, ‘আমি মরে গেলেও সাত কোটি মানুষ দেখবে দেশ সত্যিকার স্বাধীন হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘হয়তো এটাই আমার শেষ ভাষণ। আমি যদি না-ও থাকি, আন্দোলন যেন থেমে না থাকে। বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলন যাতে না থামে।’ একাত্তরের ৩ মার্চ পল্টনে ছাত্রলীগ এবং শ্রমিকলীগের উদ্যোগে এক বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু এ আহ্বান জানান।
জনসভায় বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার কথা বলায় উদ্বেলিত মানুষ ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’, ‘গ্রামে গ্রামে দূর্গ গড়, মুক্তিবাহিনী গঠন কর’ স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে। নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বঙ্গবন্ধুকে বাংলার স্বাধীকার আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করা হয় ।
জনসভায় বক্তব্য রাখেন তোফায়েল আহমেদ, শ্রমিক নেতা আবদুল মান্নান এবং ডাকসু নেতা আবদুল কুদ্দুস মাখন। ড. মোহাম্মদ হান্নান তাঁর ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ গ্রন্থে এ ব্যাপারে বিস্তারিত লিখেছেন। তিনি লেখেন, ‘বঙ্গবন্ধু এদিন ভাষণে অফিস আদালতে যাওয়া এবং কর খাজনা দেওয়া বন্ধ রাখতে বলেন। রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করলে তিনি তা মান্য না করার নির্দেশ দেন।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘দানবের সাথে লড়াইয়ে যেকোনো পরিণতিকে মাথা পেতে বরণের জন্য আমরা প্রস্তুত। তেইশ বছর রক্ত দিয়ে এসেছি। প্রয়োজন বোধে বুকের রক্তে গঙ্গা বইয়ে দেব। তবু সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও বাংলার বীর শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করব না।’
এদিকে ৩ মার্চ সারা দেশে পূর্ণ হরতাল শেষে ঢাকা, চট্রগ্রাম, রংপুর ও সিলেটে গোলযোগ হয়।