*সরকারি বিভিন্ন ফি ১ বছরের জন্য মওকুফ করা
*ব্যবসায়ীরা ব্যবসা গুটিয়ে নিবে, কর্মচারীরা চাকুরী হারাবে
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: ৫ আগস্টের পর থেকে নগরীর দোকানপাট,মার্কেট ও শপিংমল খুলে দিতে সরকারের কাছে জোর দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ।
বুধবার (৪ আগস্ট) সকাল ১১ টায় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবী জানান। ব্যবসায়ীদের দাবী গুলো হলো লক্ষ লক্ষ ব্যবসায়ী ও শ্রমিক কর্মচারীদের জীবিকার স্বার্থে স্বাভাবিক নিয়মে মার্কেটসমূহ খুলে দেওয়া, দোকান পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট খরচ ও কর্মচারী, শ্রমিক দের বেতন বোনাস বাবদ খরচ নির্বাহের জন্য ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে এসএমই ঋণের আওতায় আনা। আর্থিক ক্ষতির কথা বিবেচনা করে প্রনোদনার ব্যবস্থা ও শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান ও দোকান মালিক, শ্রমিক-কর্মচারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আনা। ব্যবসায়ী,শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য টিকা দান বুথের ব্যবস্থা করা, করোনাকালীন ক্ষতির কথা বিবেচনা করে, সরকারী বিভিন্ন ফি যেমন ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট, ট্যাক্স এক বছরের জন্য মওকুফ করা। সাথে সাথে ব্যবসায়ীদের প্রণোদনার আওতায় এনে প্রণোদনা প্রদান।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি,চট্রগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি আলহাজ্ব ছালামত আলীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সাধারন সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ইউছুপ ।
তিনি বলেন, এ সমিতির অধীনে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ দোকান মালিক ও সাড়ে ১০ লক্ষ শ্রমিক-কর্মচারী রয়েছে। গেল বছর সরকার ২৫শে মার্চ থেকে সরকারী সিদ্ধান্তকে যথাযথ সম্মান করে সকল মার্কেটের ব্যবসায়ী তাদের দোকান পাট বন্ধ রেখেছিল। তখন থেকে দফায় দফায় লকডাউনের প্রভাবে ব্যবসায়ীদের মধ্যে নেমে আসে চরম দূর্দশা । এ চরম দূর্দশায় কিছু ক্ষতি পুষাতে রমজান, ঈদুল আযহা, পুজা, পহেলা বৈশাখ সহ বিভিন্ন মৌসুমে ব্যবসা করে করে থাকে। কিন্তু চলমান লকডাউনে তা করতে ব্যর্থ হয়ে ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়ে।নেতৃবৃন্ধরা আরও বলেন, জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে গেল বছরই চট্টগ্রামে তারাই সর্ব প্রথম তাদের আওতাভুক্ত দোকানপাট,মার্কেট ও শপিংমলের প্রবেশ পথে নিজ উদ্যেগে জীবাণুনাশক টানেল, স্প্রে মেশিন স্থাপন, সর্বদা মাস্ক পরিধান, শরীরের তাপমাত্রা মাপা সহ নানাবিধ কার্যক্রম হাতে নেন। টিকাদান কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এ সমিতির মাধ্যমে কয়েক হাজার মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাক্সিনের নিবন্ধন কার্যক্রমও শুরু করেন। যা এখনো চলমান আসে। কিন্তু সংক্রমন ও মৃত্যুহারের উর্ধ গতির কারণে সরকার আবার ২৩ জুলাই থেকে ৫আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লক ডাউনের ঘোষনা করে।
সরকার অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে শিল্প, কল-কারখানা, গার্মেন্টস, কাঁচা বাজার, ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এই কঠোর লক ডাউনেও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। শুধুমাত্র মার্কেটসমূহ, দোকানপাট ও গণ পরিবহন বন্ধ রেখে লক্ষ লক্ষ ব্যবসায়ী ও শ্রমিক কর্মচারীর জীবিকা নির্বাহের পথ বন্ধ রয়ে গেল।সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্ধরা অভিযোগ করে বলেন, এই করোনা মহামারীর সময়ে দীর্ঘদিন ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা সরকারী ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট, ইনকাম ট্যাক্স সহ যাবতীয় সকল ফি প্রদান করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে। অথচ এই লগ ডাউনের কারণে যদি ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিচালনা করতে না পারে,তাহলে তারা তাদের পূঁজি হারিয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়বে। শুধু তাই নয়, সারা দেশের ব্যবসায়ীদের ন্যায় আমাদের সমিতির আওতাধীন লক্ষাধিক ক্ষুদ্র মাঝারি দোকানের ব্যবসায়ী শ্রমিক কর্মচারী ও তাদের পরিবার আজ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসায়ীগণ তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিবে, কর্মচারীরা তাদের চাকুরী হারাবে। দেশে বেকারত্ব বেড়ে গিয়ে শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে বলে মনে করেন তারা। এই পরিস্থিতে তারা নিন্মোক্তদাবী বাস্তবায়নে সরকারের কাছে জোর দাবী জানা।এছাড়াও, বৈশ্বিক মহামারীর এই ক্রান্তিকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা ও বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান ব্যবসায়ীরা। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।