Home First Lead সফলতার কাহিনী :৫ ব্যাগ দারুচিনি, ২ বস্তা যত্রিক নিয়ে ব্যবসা শুরু

সফলতার কাহিনী :৫ ব্যাগ দারুচিনি, ২ বস্তা যত্রিক নিয়ে ব্যবসা শুরু

আবুল বশর চৌধুরী

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: আবুল বশর চৌধুরী। চেয়ারম্যান বিএসএম গ্রুপ। তবে এখনও অধিক পরিচিতি ‘মাসুদ ব্রাদার্সের বশর সা’ব’ নামে। দেশে ভোগ্যপণ্যের শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারকদের অন্যতম তিনি। ব্যবসা শুরু করেন মশলা দিয়ে। মাত্র ৫ ব্যাগ দারুচিনি আর দু’বস্তা যত্রিক। আর এখন বিএসএম গ্রুপের বার্ষিক টার্নওভার ৩৭০০ কোটি টাকা। ডজনের বেশি ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান। তবে, চিংড়ি হ্যাচারি ঘুরিয়ে দেয় তাঁর ভাগ্যের চাকা।

 

এক বর্ণাঢ়্য বিচিত্র জীবন বশর চৌধুরীর। পৃথিবীর বহু দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রথম, আবার কোন কোন দেশ থেকে প্রথম এবং একমাত্র আমদানিকারক তিনি। ব্যবসায়িক ঝুঁকি নিয়ে কোন কোন পণ্য আমদানি করেছেন একাই।

বিজনেসটুডে২৪ এর সাথে একান্ত আলাপচারিতায় আবুল বশর চৌধুরী বললেন, ‘আমি তো মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। আমার বাবাও ছিলেন ব্যবসায়ী। বড়সড় কোন ব্যবসায়ী নয়, কাপড়ের ব্যবসা করতেন। বিভিন্ন টেক্সটাইল মিলের এজেন্সি ছিল। চীন থেকে আমদানি করতেন তৎকালীণ জনপ্রিয় চায়নিজ ক্লথ।’ আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষ অনার্সে, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে, তখন বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর আর বেশিদিন ব্যবসা করতে পারেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে হলে থাকতেন আবুল বশর। অনার্সের ফলাফলে পজিশন ছিল।

বললেন, ‘অনার্স পরীক্ষার আগে জানতে পারি যে বাবার শারিরীক অবস্থা ভাল না। নিজের কিছু জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। কল্পনাও করতে পারিনি তা। ৯ ভাইবোন। ভাইদের মধ্যে সবার বড় আমি। কেবল বড় দু’বোনের বিয়ে হয়েছে। ছোট ভাইবোনদের লেখাপড়া, ইত্যাদি বিবেচনা করে ব্যবসায় নেমে পড়ি। ব্যবসা শুরু করি, বাবার অফিসেও যাইনি, নিজেই খাতুনগঞ্জে ভিন্নধর্মী ব্যবসা, কমোডিটির ব্যবসা আরম্ভ করি ।  মশলার ব্যবসা দিয়ে শুরু। আমদানিকারকদের কাছে থেকে  কিনতাম, কিনে বিভিন্ন স্থানে, ঢাকা, সিলেট, খুলনার পাইকারদের কাছে বিক্রি করতাম।’

গোড়ার কথা

বিএসএম গ্রুপ চেয়ারম্যান জানালেন ব্যবসা শুরুর কথা। কেবল ৫ বান্ডেল দারুচিনি ও দু’বস্তা যত্রিক কিনি। বান্ডেলকে তখন ব্যাগ বলতো। পাটির বেতের মত বেত দিয়ে মোড়ানো ব্যাগের ভিতরে থাকতো পণ্য।  পটিয়ায় বাড়ি, তাই ওখানকার পরিচিত ব্যবসায়ীদের কাছে যেতাম, তাদের সাথে সলা-পরামর্শ করতাম। ভগ্নিপতি কালাম সাহেব’ ( টিকে গ্রুপ )র  তখনই ভাল ব্যবসা। চাক্তাই হেড অফিস। সেখানে যেতাম। ভাল পরামর্শ সেখান থেকে পেয়েছি।

আমদানি বাণিজ্য শুরু

ব্যবসায় কিছুটা অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের পর আমদানির দিকে ঝুঁকেন নতুন উদ্দীপনা নিয়ে। এক কন্টেইনার যত্রিক আমদানি দিয়ে সূচণা ১৯৮৭ সালের শেষদিকে। তাতে সফলতা দেখে দারুচিনি, লবঙ্গ আমদানি করেন ছোট ছোট আকারে। অস্ট্রেলিয়া থেকে এনেছেন মটর ডাল। কিসমিস, খেজুর, বাদাম আমদানি করেছেন। এভাবে এগিয়ে যাওয়ার পথে বড় ধাক্কা লাগে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে। একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। তারপরও সাহস হারাননি । নতুনভাবে আরও উৎসাহে নেমে পড়েন। বছর দু’য়েকের মধ্যে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হন।

বেসরকারি খাতে চাল আমদানি উন্মুক্ত করা হয় ১৯৯৩ সালের শুরুতে। তখন ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার থেকে বাল্কে আমদানি করেন চাল।  সেই সঙ্গে বড় বড় গ্রুপ- সিটি, মেঘনা, টি কে , আবুল খায়েরকে লাখ লাখ টনের ইন্ডেন্টও দিয়েছেন বিভিন্ন আইটেমের। সে সময়ে আবুল খায়ের, টি কে, মেঘনার সাথেও শেয়ার করে বড় বড় জাহাজে আমদানি করেন মাসুদ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক আবুল বশর চৌধুরী।

সফলতার মডার্ন হ্যাচারি

সবচে’ গর্বের ও সফলতার মডার্ন হ্যাচারি। কক্সবাজারে কলাতলিতে  এই হ্যাচারির মালিক ছিলেন কুমিল্লার জনৈক রহমান। দুর্ঘটনায় মারা যান। তখন এটা ব্যাংকের কাছে ঋণগ্রস্ত। রহমান সাহেবের শ্যালক তা বিক্রির আগ্রহ নিয়ে দ্বারস্থ হন আবুল বশরের। হ্যাচারি সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতা না থাকলেও শুধুমাত্র আগ্রহের বশে রাজি হন। কিনে নেন ভগ্নিপতি কালাম সাহেবকে সঙ্গে করে। ’৯৬ সালের প্রথমদিকে। হ্যাচারির জন্য ভারত থেকে টেকনিশিয়ান নিয়ে আসা হয়। তাও বাংলাদেশে তিনি প্রথম করেন। মডার্ন হ্যাচারিতে কৃত্রিম প্রজনন হয় ব্যাপকভাবে। সবচেয়ে বেশি চিংড়ি পোনা হয়েছে মডার্নে। এক বছরে মুনাফা হয়েছে ২৬ কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে জাতীয় মৎস্য পদক  নিচ্ছেন  আবুূল বশর চৌধুরী   ( ২০১৭)

এভাবে এগিয়ে গেছেন আবুল বশর চৌধুরী। বললেন, মশলা দিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে গোটা দেশের ভোগ্যপণ্য চাহিদার ৫০/৬০ ভাগ একাই আমদানি করেছি ২০০০ সাল পর্যন্ত।

তিনি আমদানি করেছেন এলাচি, বিভিন্ন প্রকারের ডাল, চাল, গম, সরিষা। ব্রাজিল থেকে আমদানি করেন বিশাল পরিমানে চিনি। পাকিস্তান, মিয়ানমার, ভারত থেকেও  চিনি আমদানি করেছেন।

প্রথম এবং একমাত্র আমদানিকারক

নরওয়ে থেকে প্রথম এবং একমাত্র আমদানিকারক মাসুদ ব্রাদার্সের আবুল বশর চৌধুরী। ১৯৯৯ সালে মটর ডাল ও গমের বোঝাই নিয়ে একটি মাত্র জাহাজ এসেছিল।

রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে প্রথম দু’জাহাজ গম আমদানিও মাসুদ অ্যান্ড ব্রাদার্সের। বশর চৌধুরী এই গম কিনতে গিয়েছিলেন সেখানে ’৯৭ সালে। ব্রাজিল থেকে চিনির প্রথম চালানটিও ছিল তাঁর। একইভাবে তার্কি থেকে গমের প্রথম চালানটিও। কানাডা তাঁর সাথে আলোচনা করে চাহিদা অনুসারে পণ্য তৈরি করে। তাদের প্রচুর জমি ও প্রযুক্তি।

ফ্রান্স থেকে প্রথম চালানে মাসুদ অ্যান্ড ব্রাদার্সের মটরশুটি নিয়ে এসেছিলে একটি জাহাজ। নাম ছিল ফরেস্ট ভেনচার।

তিনি আমদানি করেছেন প্যাসিফিক আইল্যান্ড থেকে। পাপুয়া নিউগিনি ও ফিজি থেকে আমদানি করেন নারকেলের কোবরা। এভাবে পৃথিবীর ৪০ দেশের সাথে সংযোগ করেছেন ।

বাংলাদেশ খাদ্যপণ্য আমদানিকারক অন্যতম দেশ। আজ যে পণ্য দেড় কোটি টন সেটা শুরুতে ১০/১৫ লাখ টনের বেশি ছিল না। ৯২ সালের আগে পর্যন্ত গম আমদানি ছিল সরকারি নিয়ন্ত্রণে। আড়াই লাখ টনের মত আমদানি হতো। এখন ৬২ লাখ টন আমদানি হয়। তেল আমদানি হতো ২ লাখ টন থেকে ৩ লাখ টন। এখন ২৮ লাখ টন। চিনি ছিল ৩ লাখ টন। বর্তমানে ৩০ লাখ টন। এভাবে সব রকমের ডাল  মিলিয়ে আমদানি হতো ১ লাখ টন, সোয়া লাখ টন। বর্তমানে ১৫/১৬ লাখ টন। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এভাবে চাহিদাও বেড়ে গেছে।

স্পর্শকাতর খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসা

আবুল বশর বললেন, খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসা, খুব স্পর্শকাতর । গুণগত মানের একটু হেরফের হলে সমস্যা। আর প্রথম নতুন কোন দেশ থেকে আমদানি এবং নতুন কোন পণ্য আমদানিতে ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জ প্রচুর। লাভ লোকসান দু’টোর সম্ভাবনা ফিফটি ফিফটি।

ব্যবসা সম্প্রসারণ

২০০১ সালে স্থাপন করেন পলিয়েস্টার সূতা কারখানা।  ১৩ টন দিয়ে শুরু। এখন ১০০/১১০ টনের মত উৎপাদন দৈনিক। হ্যাচারির মত এটাও দেশের বৃহত্তম।

২০০১ সালের পর ব্যবসা আরও সম্প্রসারণ হয়েছে বিএসএম গ্রুপের। ব্রোকারস লাইসেন্স কেনা হয় ২০০৯ সালে। মকবুলার রহমান জুট মিল কিনে গ্রুপটি ২০১০ সালে। ২০১৪ সালে এলিট পেইন্ট থেকে কেনা হয়েছে সুপার পেট্রোকেমিক্যাল টিকে গ্রুপের সাথে। বেসরকারি মালিকানায় জ্বালানি খাতে প্রথম কোন কারখানা এটা। দেশে কেবল মাত্র সরকারি খাতে অশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি হয়। ইস্টার্ন রিফাইনারিতে শোধন করা হয়। সেখানকার বাইপ্রোডাক্ট ন্যাপথা। আগে রপ্তানি করতো। রপ্তানির একই মূল্যে বিক্রির চুক্তি রয়েছে সুপার কেমিক্যালের সাথে। ন্যাপথা থেকে তৈরি হয় অকটেন। দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৮০ ভাগ এখান থেকে সরবরাহ করা হয়। মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে স্থাপন করা হচ্ছে পলিমার চিপস কারখানা। উৎপাদনে যাবে ২০ ২১ সালের শেষদিকে।

বন্দরের বাল্ক ব্যবস্থাপনা নিয়ে অসন্তোষ

শীর্ষস্থানীয় আমদানিকারক আবুল বশর চৌধুরী সন্তুষ্ট চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং নিয়ে। তবে, একেবারে অসন্তোষ বহির্নোঙরে মাদার ভেসেল থেকে ও সাধারণ পণ্য খালাস ব্যবস্থাপনায়। জানান, বন্দর বিশেষত কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে একেবারে ‍যুগোপযোগী না হলেও একটা  জায়গায় এসে গেছে। তা ভাল দিক। যথেষ্ট এগিয়েছে এ ক্ষেত্রে। চার্জ চড়া হলও ভাল। মাল থাকে সুরক্ষিত।

মাদার ভেসেল প্রসঙ্গে বললেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাল্কের বেলায় অনেক পিছিয়ে। অথচ বাল্কে ৭ কোটি টনের মত পণ্য আসে। তা আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে। বিভিন্ন দেশের বন্দরে যে জাহাজের পণ্য খালাস করতে ৫/৭ দিন লাগে, সে রকম জাহাজের পণ্য খালাসে আমাদের দেড় মাস পর্যন্ত লেগেছে।

সিন্ডিকেশন সত্য নয়

আবুল বশর চৌধুরী জানান, এখন আমদানি অবাধ। যে কেউ যে কোন পরিমাণে আমদানি করতে পারে। তাই কোন পণ্য নিয়ে সিন্ডিকেশন বা সিন্ডিকেট করার কোন সুযোগ নেই। তারপরও কোন কারণ ছাড়া কেবল পরিস্থিতিতে দাম বাড়ে কখনও কখনও তা সত্য। পেঁয়াজের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, প্রতিবেশি ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিল। সে পরিস্থিতিতে কোন দেশ থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি করা যাবে তা জানতে জানতে লেগে যায় ২০/২৫ দিন। ঋণপত্র করার ৩ মাস পর পণ্য আসে। আর ততদিনে বাজারে যা হওয়ার হয়ে যায়।  বিশেষত নিত্য প্রয়োজনীয় কোন পণ্যের চাহিদা কত, স্থানীয় যোগান, ঘাটতি, সংরক্ষণ ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে সঠিক পরিসংখ্যানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

জীবনে কাউকে ঠকাতে চাইনি

বেশ দৃঢ়তার সাথে বললেন, আমি জীবনে কাউকে ঠকাতে চাইনি। পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে বলতে পারবো না যে আমি তুলসি ধোয়াপাতা। কারণ আমিও তো এই সমাজের একজন। তবে, নিজের ক্ষতি হলেও অন্যজনের ক্ষতি করতে চাইনি।

মা-বাবা চেয়েছিলেন ডাক্তার হই

মা-বাবার ইচ্ছা ছিল আমাকে চিকিৎসক হিসেবে তৈরির। এসএসসি, এইচএসসি সে লক্ষ্য নিয়ে বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণ হয়েছি। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি অন্যদিকে নিয়ে গেছে বাবার অসুস্থতার কারণে। বাবা ব্যবসায়ী হলেও ব্যবসায়ী হওয়ার কোন ইচ্ছা আমার ছিল না। নিজের সিদ্ধান্তে পরবর্তীতে নেমে গেছি ব্যবসায়। তা করে বড় সার্থকতা হলো সব ভাইবোনের মাস্টার্স কমপ্লিট করানো।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক আবুল বশর চৌধুরীর জন্ম ১৯৬২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। বাবা মারা গেছেন ১৯৮৫ সালে। মা বেঁচে আছেন।

৩ ভাই একই সঙ্গে থাকেন। ব্যবসাও একসাথে।

বিয়ে করেন ১৯৯৩ সালে। স্ত্রী গৃহিনী। দুই মেয়ে, এক ছেলে। বড় মেয়ে ইংরেজিতে অনার্স করছেন আমেরিকান ইউনিভার্সিটি সারজায়। ছোট মেয়ে মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন নিয়ে পড়ছেন  সেকেন্ড ইয়ারে। ছেলে প্রেসিডেন্সিতে ও লেভেল পরীক্ষা দেবে । বললেন, ‘বাবা হিসেবে আমার দায়িত্ব ওদেরকে যথাযথ শিক্ষা দেয়া। প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হতে হবে এমন কোন কথা নেই, তবে ভাল মানুষ হতে হবে। কিভাবে ভাল মানুষ হবে সেটাই যেন তারা শিখে এই প্রত্যাশা।’