Home First Lead ৭৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

৭৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

করোনা ভাইরাস থেকে সৃষ্ট অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোট ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন

রবিবার গণভবনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই প্যাকেজ ঘোষণা করেন সরকার প্রধান। তিনি এই প্রণোদনা প্যাকেজ যেন অপব্যবহার না হয় সেদিকেও সতর্ক করেন

করোনাভাইরাস (কোভিড১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব থেকে উত্তরণের পরিকল্পনা ঘোষণার উদ্দেশে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতিতে করোনার প্রভাব মোকাবেলায় ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করছি। এটি বাস্তবায়ন হলে দেশের মানুষের আর্থসামাজিক গতিশীলতা অব্যাহত থাকবে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে

সম্ভাব্য পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকার মূলত চারটি কৌশল অবলম্বন করবে) সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি; ) আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ প্রণয়ন; ) সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি; ) মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি

এই চারটি আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের মাধ্যমে যে বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে) ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা দেয়া; ) ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা দেয়া; ) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত এক্সপোর্ট ডেভলপমেন্ট ফান্ডের (ইডিএফ) সুবিধা বাড়ানো; ) প্রিশিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম প্রণয়ন করা

ইতিপূর্বে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের শ্রমিককর্মচারীদের বেতন/ভাতা পরিশোধ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাজার কোটি টাকার একটি আপৎকালীন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। সেটি সহ মোট আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের পরিমাণ হবে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা

) ​সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করা: সরকরি ব্যয়ের ক্ষেত্রেকর্মসৃজনকেমূলত প্রাধান্য দেয়া হবে। বিদেশ ভ্রমণ এবং বিলাসী ব্যয় নিরুৎসাহিত করা হবে। আমাদের ঋণের স্থিতিজিডিপি অনুপাত অত্যন্ত কম (৩৪%) বিধায় অধিকতর সরকারি ব্যয় সামষ্টিক অর্থনীতির উপর কোনো চাপ সৃষ্টি করবে না

()​ আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ প্রণয়ন: ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে কতিপয় ঋণ সুবিধা প্রবর্তন করা হবে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুনরুজ্জীবিত করা, শ্রমিককর্মচারীদের কাজে বহাল রাখা এবং উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখাই হলো আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের মূল উদ্দেশ্য

() ​সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি: দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগণ, দিনমজুর এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করা হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমসমূহ হলো: () বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ; () ১০ টাকা কেজি দরে চাউল বিক্রয়; () লক্ষ্যভিত্তিক জনগোষ্ঠির মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ; () ‘বয়স্ক ভাতাএবংবিধবা স্বামী নিগৃহীতা মহিলাদের জন্য ভাতাকর্মসূচির আওতা সর্বাধিক দারিদ্র্যপ্রবণ ১০০টি উপজেলায় শতভাগে উন্নীত করা; এবং () জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত অন্যতম কার্যক্রম গৃহহীন মানুষদের জন্য গৃহ নির্মাণ কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়ন করা; ইত্যাদি

()​ মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা: অর্থনীতির বিরূপ প্রভাব উত্তরণে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে সিআরআর এবং রেপোর হার কমিয়ে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যা আগামীতেও প্রয়োজন অনুযায়ী অব্যাহত থাকবে। তবে ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য থাকবে যেন মুদ্রা সরবরাহজনিত কারণে মুদ্রাস্ফীতি না ঘটে

এই চারটি আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের মাধ্যমে মূলত যে বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে:

) ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রদান: ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পসুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদানের লক্ষ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে। ব্যাংকক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ সংশ্লিষ্ট শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব তহবিল হতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ দেবে। ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে শতাংশ। প্রদত্ত ঋণের সুদের অর্ধেক অর্থাৎ .৫০ শতাংশ ঋণ গ্রহিতা শিল্প/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট .৫০ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে প্রদান করবে

() ​ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রদান: ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পসুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদানের লক্ষ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ সুবিধা প্রণয়ন করা হবে। ব্যাংকক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব তহবিল হতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ প্রদান করবে। ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে শতাংশ। প্রদত্ত ঋণের শতাংশ সুদ ঋণ গ্রহিতা শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসাবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেবে

() ​বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত ইডিএফ (এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড)- এর সুবিধা বাড়ানো: ব্যাকটুব্যাক এলসি এর আওতায় কাঁচামাল আমদানি সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইডিএফএর বর্তমান আকার . বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হবে। ফলে . বিলিয়ন ডলারের সমপরিমান অতিরিক্ত ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ইডিএফ তহবিলে যুক্ত হবে। ইডিএফএর বর্তমান সুদের হার লেবার + . শতাংশ (যা প্রকৃত পক্ষে .৭৩%) থেকে কমিয়ে শতাংশ নির্ধারণ করা হবে

() প্রিশিপিং ক্রেডিট ফাইনেন্সিং স্কিম নামে বাংলাদেশ ব্যাংক হাজার কোটি টাকার একটি নতুন ঋণ সুবিধা চালু করবে। ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে শতাংশ

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক