- আল্লামা শফিকে অব্যাহতি ও আনাস মাদানীকে বহিস্কার দাবি
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
হাটহাজারী: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমির আল্লামা আহমদ শফিকে মহাপরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি ও তাঁর পুত্র মাওলানা আনাস মাদানীকে বহিস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠেছে দেশের অন্যতম প্রধান কওমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা (বড় মাদ্রাসা)।
বুধবার দুপুরের পর থেকে মাদ্রাসার মূল ফটক বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এসময় মাওলানা আনাস মাদানীসহ কয়েকজন শিক্ষকের দপ্তরও ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশংকায় মাদ্রাসার সামনে অবস্থান নিয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। সেখানে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বুধবার যোহরের নামাজের পর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মূল ফটক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরবর্তীতে বিভিন্ন ক্লাশ থেকে অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও এসে সেখানে যোগ দেয়। এসময় তাঁরা মাইকে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানীর অপসারণের দাবি করতে থাকে। বিক্ষোভ চলাকালে আনাস মাদানীসহ আরো কয়েকজন শিক্ষকের দপ্তরও ভাংচুর করা হয়।
খবর পেয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন মাদ্রাসায় ছুটে গেলেও ফটক বন্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। পরে জেলা পুলিশ সুপার রশিদ উল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌল্লা রেজা সহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য সেখানে উপস্থিত হন। মাদ্রাসায় বিক্ষোভের খবর পেয়ে আশেপাশের এলাকার লোকজনও ছুটে যায় সেখানে। এসময় মাদ্রাসার বাইরে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড় জমে। কিন্তু ভেতর থেকে গেট বন্ধ রাখার কারণে পুলিশ কর্মকর্তারা বাইরেই অবস্থান নেন।
পুলিশ সুপার রশিদ উল হক সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ। আশা করি সেখানেই বিষয়টি সমাধান হবে। তবে এ ঘটনার কারণে কোন ধরণের আইন শৃংখলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না ঘটে সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি।
বিক্ষোভকারীদের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি সম্বলিত একটি প্রচার পত্র বিতরণ করা হয়। এতে উল্লেখিত দাবিগুলো হলো- মাওলানা আনাস মাদানীকে অবিলম্বে মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার করা, শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বাস্তবায়ন ও সকল প্রকার হয়রানি মূলক কার্যক্রম বন্ধ করা, শারীরিক অক্ষমতার কারণে আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে উপদেষ্টা পদে রাখা, মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা পরিপূর্ণভাবে শূরার কাছে হস্তান্তর করা, আগের শূরার হক্কানী আলেমদেরকে পুনরায় নিয়োগ এবং শূরার মধ্যে দালালদেরকে বহিষ্কার করা। এসব দাবি মানা না হলে মাদ্রাসার সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করা, আদর্শিক এ আন্দোলনের বাধা সৃষ্টি হলে সমস্ত কওমি মাদ্রাসায় আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে বলেও প্রচারপত্রে উল্লেখ করা হয়।