Home Uncategorized অপর্যাপ্ত বন্দর সুবিধা ব্যবসা পরিচালনায় অন্যতম প্রতিবন্ধকতা: ডিসিসিআই জরিপ

অপর্যাপ্ত বন্দর সুবিধা ব্যবসা পরিচালনায় অন্যতম প্রতিবন্ধকতা: ডিসিসিআই জরিপ

চট্টগ্রাম বন্দর

 

বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ আসার পর তা খালাস প্রক্রিয়া শেষে কারখানায় পৌঁছাতে সময় লাগে ১৫ দিনের বেশি। একই ভাবে কারখানা থেকে পণ্য পাঠানোর পর জাহাজীকরণ পর্যন্তও ১৫ দিন সময় লাগে।

ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সম্প্রতি করোনার কারণে পণ্য আমদানি-রপ্তানি নিয়ে একটি জরিপ চালিয়েছে। তাতে এ তথ্য উঠে এসেছে। মহামারীর সময়ে অপর্যাপ্ত লজিস্টিক সুবিধার কারণে চলতি বছরে রপ্তানি প্রায় ১৭ শতাংশ কমে গেছে। মঙ্গলবার লজিস্টিকস বিষয়ে এক ওয়েবিনারে  এ তথ্য জানান ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ।

ওয়েবিনারে আমদানি-রপ্তানিকারকদের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধি ও অর্থনীতিবিদরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান।

মূলত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন কাজগুলো লজিস্টিকস হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে সড়ক ও নৌপরিবহন, শুল্ক ও বন্দর ইস্যু, পণ্য গুদামজাতকরণের মতো বিষয়গুলো রয়েছে। বক্তারা জানান, এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে। ডিসিসিআই সভাপতি জানান, ‘বৈশ্বিক লজিস্টিক সূচক ২০১৮’ অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ১০০ এবং এক্ষেত্রে আমাদের প্রতিযোগী এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা বেশ পিছিয়ে রয়েছি।

ডিসিসিআইর ওই জরিপে দেখা যায়, কভিড মহামারীর কারণে ৪২ শতাংশ মনে করে, কারখানা থেকে সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৫ দিনের বেশি সময় প্রয়োজন হয়।

আর ৬২ শতাংশ উদ্যোক্তা জানিয়েছেন, সমুদ্রবন্দর থেকে কারখানা পর্যন্ত পণ্য আমদানিতে ১৫ দিনের বেশি সময় লেগেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের বেশিরভাগ জানিয়েছেন, বন্দরে কন্টেইনার জট, পোর্ট ডেমারেজ চার্জ, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সে দীর্ঘসূত্রতা, অপর্যাপ্ত বন্দর অবকাঠামো সুবিধা ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হিসেবে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।

বিশ্বব্যাংকের মতে, রাস্তাঘাটে যানজট নিরসন ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা উন্নয়ন করা গেলে ব্যবসা পরিচালনায় প্রায় ৭-৩৫ শতাংশ ব্যয় কমানো সম্ভব। বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৯০ শতাংশ সমুদ্রবন্দরের ওপর নির্ভরশীল হলেও আমাদের বন্দরগুলো এখনো পুরনো প্রযুক্তি এবং ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভরশীল। এ সময় বক্তারা লজিস্টিকস নীতিমালা প্রণয়ন, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য একক সংস্থা গঠন, বন্দরগুলোতে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়ার অটোমেশন, বন্দরের সঙ্গে সড়ক, রেল ও নদীপথের যোগাযোগ উন্নয়নসহ উন্নত দেশগুলোর মতো ‘লজিস্টিক ও ওয়্যারহাউজ পার্ক’ স্থাপনের আহ্বান জানান তারা।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক লজিস্টিকস সেবাকে আরও সহজ করার ওপর গুরুত্ব দেন। একই সঙ্গে আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ বাড়ানোর কথাও বলেন। তিনি সম্প্রতি বাংলাদেশ ভারতের একাধিক স্থলবন্দর পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীদের ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি আসিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা আরও বাড়ানো এবং আসিয়ান প্লাস ওয়ান নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান।

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক