বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:
সারা দেশে হিমাগারে রাখা আলুর মজুত বিষয়ে তথ্য জানতে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছে প্রতিযোগিতা কমিশন। মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, চিঠি পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলায় কী পরিমাণ আলু মজুত আছে, সেই তথ্য দিতে।
কমিশন বলছে, অন্যান্য বছর হয়তো কোনো হিমাগার ১০০ টন আলু সংরক্ষণ করত। এবার একই হিমাগার ২০০ টন আলু মজুত রাখলে তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন।
দেশে আলুর বার্ষিক চাহিদা ৭৫ লাখ টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি টনের বেশি। বাড়তি উৎপাদনের পরও কয়েকদিন ধরে আলুর বাজারে যেন আগুন। ভোক্তা পর্যায়ে হাফ সেঞ্চুরি আলুর দাম। উৎপাদন মৌসুমে এক-চতুর্থাংশ দামে কৃষকের কাছ থেকে কিনেছিলেন হিমাগার মালিক ও মজুত ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, সারা দেশের হিমাগারে কী পরিমাণে আলু মজুত আছে তা জানতে ডিসিদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। ডিসিরা চিঠি পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলায় আলু মজুদের তথ্য দেবে। আলুতে কার্টেল (সিন্ডিকেট) হলেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
তিনি আরও বলেন, পণ্যের ক্ষেত্রে বাজারে কোনো ধরনের যোগসাজশ কিংবা মনোপলি আচরণ করলে প্রতিযোগিতা কমিশন বসে থাকবে না। বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে তদারকি করব। আলুর ক্ষেত্রে বাজারে এক ধরনের অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতা চলছে, এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর দীর্ঘমেয়াদি বন্যার কারণে অধিকাংশ জেলায় সবজি উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে সব ধরনের সবজির দাম চড়া। এ অবস্থায় সবজি হিসেবে আলুই ছিল নিম্নআয়ের মানুষের ভরসা। এছাড়া করোনার সময় ত্রাণ হিসেবে সারা দেশে ব্যাপকভাবে আলু ব্যবহার হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পণ্যটির বাজার অস্থির করে তুলেছে মধ্যস্বত্বভোগীরা।
২০১৯-২০ মৌসুমে আলু উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। উৎপাদিত আলুর ৪০ লাখ টন হিমাগারগুলোতে সংরক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৫৫ শতাংশ আলু হিমাগারগুলো থেকে বের করা হয়েছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানায়, বর্তমানে খুচরা বাজারে ৩৫-৪০ টাকা দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে ৩০ ও হিমঘরে ২৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সারা দেশে সরকারিভাবে ৩৭১ হিমাগারে আলু সংরক্ষণের সক্ষমতা ৫০ লাখ টন।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, দাম নির্ধারণের ফলে আলুর বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। পাইকারি বাজারে ৩০ ও হিমাগারে ২৭ টাকা দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরায় ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমরা যখন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি তখন অনেকে ২৫ টাকা দরে আলু বিক্রি করে। মোবাইল কোর্ট শেষে যেই লাউ সেই কদু। তারপরও আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি।