Home আন্তর্জাতিক বাইডেনের শপথের দিনে সশস্ত্র হামলার আশংকা এফবিআই’র

বাইডেনের শপথের দিনে সশস্ত্র হামলার আশংকা এফবিআই’র

ট্রাম্পকে ইমপিচ করার প্রক্রিয়া শুরু

আমেরিকার ভাবী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথের দিন ওয়াশিংটন ও আমেরিকার ৫০ টি প্রদেশের রাজধানীতে সশস্ত্র হামলা হতে পারে। মার্কিন প্রশাসনকে এই মর্মে সতর্ক করল এফবিআই। আগামী ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন বাইডেন। সেদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুগামীরা যাতে হামলা করতে না পারে, সেজন্য ওয়াশিংটনে মোতায়েন রাখা হবে ১৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মনুমেন্টগুলি ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকছে।

বাইডেনের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য তৈরি হয়েছে একটি কমিটি। শপথগ্রহণের থিম হবে ‘আমেরিকা ইউনাইটেড’। একটি সূত্রে খবর, এফবিআই বলেছে, ১৬ জানুয়ারির পর ট্রাম্পের সমর্থকরা হামলার চেষ্টা করবে। সেনেটর ক্রিস মার্ফি প্রতিরক্ষা দফতরের কার্যনির্বাহী সচিবকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, ১৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ডও রাজধানীকে নিরাপদ রাখতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। তিনি চান, বাইডেনের শপথের সময় ওয়াশিংটনে সেনা মোতায়েন করা হোক।

ট্রাম্পকে দোষ দিয়ে ওবামা বলেছেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট আইনসম্মত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ক্রমাগত মিথ্যা বলে চলেছেন। তিনি যে কাজ করেছেন, তাতে অসম্মানিত হয়েছে পুরো আমেরিকা। কিন্তু ট্রাম্প আচমকা কিছু করেননি।

ওবামার মতে, বেশ কিছুদিন ধরে এই হিংসার প্রস্তুতি চলছিল। তিনি বলেছেন, “দু’মাস ধরে একটি রাজনৈতিক দল ও তার অনুগত মিডিয়া তাদের সমর্থক ও দর্শকদের সত্যি কথাটা জানায়নি। সত্যি কথাটা হল এই যে, বাইডেন মোটেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ট্রাম্পকে পরাজিত করেননি।” এরপরে ওবামা সরাসরি মিথ্যা খবর প্রচারের জন্য রিপাবলিকান পার্টি ও তার সমর্থক মিডিয়াকে দায়ী করেছেন। প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাল্পনিক খবর প্রচার করা হয়েছে। নাগরিকদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভে ইন্ধন দিয়ে তাঁদের একাংশকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে হিংসার পথে।

রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের উদ্দেশে ওবামা বলেছেন, “গণতন্ত্রের কক্ষটি কলঙ্কিত হয়েছে। রিপাবলিকান নেতারা যে পথে চলছেন, আগামী দিনে সেই পথেই চলতে পারেন। এইভাবে হিংসায় উস্কানি দিতে পারেন। অথবা তাঁরা স্বীকার করে নিতে পারেন বাস্তবকে। হিংসার আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে পারেন। এককথায় তাঁরা আমেরিকার স্বার্থে কাজ করতে পারে।

ট্রাম্পকে ইমপিচ করার প্রক্রিয়া শুরু

এদিক, হোয়াইট হাউস থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইমপিচ করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিলেন ডেমোক্র্যাট সদস্যেরা। ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে নজিরবিহীন হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে যত দ্রুত সম্ভব ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্টের গদি থেকে সরানো যায় সে চেষ্টা শুরু করেছিলেন ডেমোক্র্যাটরা। ২০ জানুয়ারি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন জো বাইডেন। তার আগেই ট্রাম্পকে পাকাপাকিভাবে হোয়াইট হাউস থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব মার্কিন কংগ্রেসে পেশ করা হয়েছিল। সে ভোটাভুটি চলছে। জানা গিয়েছে, আগামীকাল অর্থাৎ বুধবারই ইমপিচ করা হতে পারে বিদায়ী প্রেসিডেন্টকে।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব নিয়ে এখনও অবধি দুটি প্রস্তাব জমা পড়েছে মার্কিন কংগ্রেসে। প্রথমত, মেয়াদ শেষের আগেই ট্রাম্পকে যাতে সরিয়ে দেওয়া যায় সেই চেষ্টা শুরু হয়েছে। দ্বিতীয়ত, বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স যাতে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীর আওতায় ক্যাবিনেটের কাছে এই প্রস্তাব রাখেন সেই চেষ্টাও শুরু করেছেন ডেমোক্র্যাটরা। এখানে ভোটাভুটির মাধ্যমে ইমপিচ করা হবে ট্রাম্পকে। হাউস মেজরিটি প্রধান স্টেনি হোয়ার বলেছেন, পেন্স যদি ট্রাম্পকে ইমপিচ করার প্রস্তাব না রাখেন, তাহলে আগামীকাল থেকেই ইমপিচমেন্টের তোড়জোড় করবে ডেমোক্র্যাটরা।

ক্যাপিটল হিলে অরাজকতা তৈরির পরে শেষমেশ বাইডেনের জয় স্বীকার করেছিলেন ট্রাম্প। ক্যাপিটল হিলে তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছিল, বাইডেন ৩০৬-২৩২ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। এর ফলে ট্রাম্প বা তাঁর সমর্থকরা আর বাইডেনের নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন না। ক্যাপিটল হিলে ঘোষণার পরে ট্রাম্প বিবৃতি দিয়ে বলেন, তিনি চান আইনসম্মত পথে ক্ষমতার হস্তান্তর হোক। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, রাজনীতি থেকে সরছেন না। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট ভোটে ট্রাম্প যে ফের লড়াইয়ের ময়দানে নামতে পারেন, এ ধারণাও তৈরি হয়েছে অনেকের। Related Posts

আমেরিকার ইতিহাসে ট্রাম্প হলেন তৃতীয় প্রেসিডেন্ট যাঁকে ইমপিচ করা হচ্ছে। আমেরিকার সংবিধানে বলা হয়েছে, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে যদি কোনও প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করা হয়, তা হলেও তিনি নিজের পদে থাকতে পারেন। এরপর সেনেট স্থির করবে পরবর্তী পদক্ষেপ। প্রেসিডেন্ট যদি দেশবিরোধী কাজ করেন, কিংবা অন্য কোনও অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব আনা যেতে পারে মার্কিন কংগ্রেসে। এর আগে যে দুই প্রেসিডেন্টকে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ইমপিচ করেছিল, তাঁরা হলেন বিল ক্লিনটন ও অ্যান্ড্রু জনসন। তাঁরা দু’জনেই রেহাই পেয়েছিলেন সেনেটে।

এক্ষেত্রে ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে অন্তত দুই তৃতীয়াংশ সেনেটরকে দাঁড়াতে হবে। একজন সেনেটের ম্যানেজার হবেন যিনি ইমপিচমেন্টের সপক্ষে যুক্তি দেবেন। সেনেটে এমনিতেই রিপাবলিকান সদস্য সংখ্যা বেশি। ডেমোক্র্যাটদের তাই নিজেদের সপক্ষে রিপাবলিকান সেনেটের সম্মতি জোগাড় করতে হবে। যেটা এখনও অবধি কঠিন কাজ।

বেশিরভাগ পর্যবেক্ষকের ধারণা, ট্রাম্প সেনেটে রেহাই পেয়ে যাবেন। একমাত্র রিপাবলিকান পার্টির ৫৩ জন সেনেট সদস্যের মধ্যে ২০ জন যদি দলীয় আনুগত্য ভুলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেন, তবেই তাঁর শাস্তি হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়।

-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক